দিনাজপুরে ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানমে’র উপর হামলার আসামি নবীরুল ইসলাম সান্টু কুমার বিশ্বাসের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় দিনাজপুরের আমলী আদালত-৭ এর সিনিয়র জুটিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিশির কুমার বসুর আদালতে দুই আসামি নবীরুল ইসলাম এবং সান্টু কুমার বিশ্বাসকে হাজির করা হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘোড়াঘাট থানার ডিবির ওসি ইমাম আবু জাফর আসামিদের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
তবে, মামলার প্রধান আসামী আসাদুল হক শারীরিক অসুস্থ্য থাকায় সে পুলিশের তত্তাবধানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে আদালকে জানানো হয়। র্যাব-১৩ সদর দপ্তর রংপুর থেকে এর ডিএডি বাবুল খানের নেতৃত্বে শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটায় নবীরুল ইসলাম ও সান্টু কুমার বিশ্বাসকে ঘোড়াঘাট থানায় সোপর্দ করে। সন্ধা ৬ টায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করেন।
এদিকে দিনাজপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানমে’র ঘটনাস্থল সরকারি বাসভবন “শাপলা”য় আনসার মোতায়েন করা হয়েছে। ১০ জনের কথা থাকলেও শুক্রবার সন্ধ্যায় আপাততঃ সেখানে ৪ জন আনসার মোতায়েন করা হয়।
প্রসঙ্গতঃ গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় সরকারি বাসভবনে দুর্বত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হন ঘোড়াঘাট থানার ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা শেখ ওমর আলী। ওয়াহিদা খানমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হলেও তার বাবা চিকিৎসাধীন আছেন রংপুরে।বৃহস্পতিবার রাতে ওয়াহিদা খানমের আড়াই ঘণ্টার জটিল অস্ত্রোপচার হয়।
অস্ত্রোপচারের পর রাতেই জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে ইউএনও ওয়াহিদা খানম।
এঘটনায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ আহমেদ বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ঘোড়াঘাট থানার একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী প্রধান আসামি আসাদুল হক (৩৬)কে হিলি সীমান্তের কালিগঞ্জ এলাকায় বোনের বাড়ি থেকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টায় গ্রেফতার করে। এর আগে ঘোড়াঘাট থেকে উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম (৪২) (আটকের পর বহিস্কৃত) ও মাসুদ রানা (৩৪) নামে আরও দু’জনকে আটক করে আইনশৃংখলা বাহিনী। প্রধান আসামী আসাদুলের স্বীকারোক্তি মতে, শুক্রবার দুপুরে ঘোড়াঘাট থেকে মুল পরিকল্পনাকারী রংমিস্ত্রি নবীরুল ইসলাম (৩২) এবং বিকেকে গোবিন্দগঞ্জ থেকে হরিজন সম্প্রসায়ের সান্টু কুমার বিশ্বাসকে আটক করে র্যাব। সেই সাথে প্রধান আসামী আসাদুল ঘটনার সময় পরিহিত লাল রঙের টিশার্ট’টিও তার বাড়ি থেকে র্যাব উদ্ধার করে।পরে শুক্রবার সন্ধা ৭টায় র্যাব-১৩ সদর দপ্তর রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান,চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় ইউএনও ওয়াহিদা খানমের উপর হামলা চালিয়েছে ৩ জন।তা মুল আসামি আসাদুল স্বীকার করেছে। পরে আটক যুবলীগ নেতা(বর্তমানে বহিস্কৃত) জাহাঙ্গীর আলমকে ছেড়ে দেয় র্যাব। অন্যদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- রংপুর ডিআইজির একজন প্রতিনিধি এবং দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ মাহমুদ।
Share!