মিয়ানমার রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যার ঘটনায় দেশটির নেত্রী অং সান সুচিসহ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্জেন্টিনায় মামলা করা হয়েছে। এতে করে প্রথমবারের মতো শান্তিতে নোবেল বিজয়ী সুচির বিরুদ্ধে সরাসরি মামলা হল। খবর দ্যা গার্ডিয়ানের।
বুধবার রোহিঙ্গা ও লাতিন আমেরিকান মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ মামলা দায়ের করে। আর্জেন্টিনার আইনে গণহত্যা বিষয়ক কোনো ফৌজদারি আইন না থাকায় গণহত্যা মামলা করা যায়নি। ‘ইউনিভার্স জুরিসডিকশন’ বা ‘বিশ্বজনীন বিচারব্যবস্থা’র আওতায় আর্জেন্টিনায় মামলাটি করা হয়েছে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর গণহত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগসহ নির্যাতনের মুখে দেশটি থেকে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।
এর আগে সোমবার ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে মামলা করেছে ওআইসিভুক্ত দেশ গাম্বিয়া।
৪৬ পৃষ্ঠার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের আবাস ধ্বংসের কথা বলেছে গাম্বিয়া।
কোনো স্থানে সংঘটিত যুদ্ধাপরাধ কিংবা মানবতাবিরোধী অপরাধ বেশি ভয়াবহ হলে যে কোনো দেশেই তার বিচার হতে পারে, এমন ধারণা থেকে আর্জেন্টিনায় ‘ইউনিভার্স জুরিসডিকশন’ বা ‘বিশ্বজনীন বিচারব্যবস্থা’ সংক্রান্ত আইন করা হয়েছিল।
এর আগে আর্জেন্টিনার আদালতে স্প্যানিশ স্বৈরশাসক ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কো ও চীনের ফালুন গং আন্দোলনের বিচার হয়েছিল এই আইনের আওতায়।
আইনজীবী টমাস ওজিয়া বলেন, অভিযোগে অপরাধী, সহযোগী ও তথ্য গোপনকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়। আমরা আর্জেন্টিনার মাধ্যমে এটা করছি, কারণ অন্য কোথাও এই অভিযোগ করার কোনো আইনি সুযোগ নেই।
মামলায় মিয়ানমারের সুচির মতো শীর্ষ রাজনীতিক ও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাংয়ের মতো সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ওজিয়া আশা করছেন, এই মামলার পর তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে।
বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন ইউকের প্রেসিডেন্ট তুন খিন বলেন, ‘দিনের পর দিন মিয়ানমার সরকার আমাদের উৎখাতে চেষ্টা করে গেছে। আমাদের হত্যা করা হয়েছে কিংবা দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।’