গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, অফিস সময়ে কিছু চিকিৎসক কর্মস্থলের বাইরে ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।স্বাস্থ্যখাতে কোনো প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।
শনিবার স্বরূপকাঠি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়েছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর গ্রামীণ পর্যায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। ওই সময় আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশের মানুষের উন্নত চিকিৎসা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার জনসংখ্যা অনুপাতে চিকিৎসক তৈরির জন্য নতুন নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপন করে যাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রতিটি হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে এবং মানুষের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকার পরও কিছু অসৎ কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কারণে মানুষ বাইরের প্যাথলজিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছেন।
তিনি বলেন, এখানের প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের হয়ে কিছু দালাল হাসপাতালের মধ্যে বিচরণ করে এবং রোগীকে ক্লিনিকে যেতে বাধ্য করেন বলে অভিযোগ আছে। হাসপাতালের আঙ্গিনায় কোনো দালাল থাকতে পারবে না বলে মন্ত্রী কর্তৃপক্ষকে কড়া হুশিয়ারি দেন। মন্ত্রী এ সব অনিয়ম কঠোর হস্তে দমন করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীকে দেয়া খাবারের মান ঠিক রাখার জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন এবং খাবারের মান ঠিক আছে কিনা- তা মনিটরিং করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় আরও বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মোল্লা আজাদ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম, সিভিল সার্জন ডা. মো. ফারুক আলম, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হক, ইউএনও সরকার আবদুল্লাহ আল মামুন বাবু, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর সিকদার, ওসি মো. কামরুজ্জামান তালুকদার। উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা শেষে দুপুরে গণপূর্তমন্ত্রী উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মিসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মিসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মো. শাহ আলম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক অ্যাডভোকেট কানাই লাল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোস্তফা কামাল, উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এস এম ফুয়াদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম মুইদুল ইসলাম, প্রফেসর আবদুস সালাম প্রমুখ।
কর্মিসভায় মন্ত্রী বলেন, দলে থাকবেন আর দলের সিদ্ধান্তবিরোধী কাজ করবেন, তা হবে না। অনুপ্রবেশকারীকে দলে স্থান দেয়া হবে না। জননেত্রী শেখ হাসিনা রাত-দিন পরিশ্রম করে দেশের উন্নয়ন করে চলছেন। এ ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, দলের পরিচয় দিয়ে যারা চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। তিনি বলেন, কাঁদা ছোড়াছুড়ি না করে দলকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের এগোতে হবে।