দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ‘ইলহা দ্য কুয়েইমাডা গ্র্যান্ডে’। জানা গেছে, সাও পাওলো থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরে এই দ্বীপে কেউ পা রাখার সাহস দেখান না। কারণ ব্রাজিলের মানুষের মধ্যে ধারণা, ওই দ্বীপে গেলে জীবিত কেউ ফিরে আসে না! এজন্য দেশটির সরকারও ওই দ্বীপে মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
রহস্যে মোড়া এই দ্বীপটিকে নিয়ে কয়েকটি গল্প প্রচলিত রয়েছে। সেই গল্প অনুযায়ী সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন এক মৎস্যজীবী। খিদে পাওয়ায় খাবারের খোঁজে ইলহা দ্য কুয়েইমাডা গ্র্যান্ডে প্রবেশ করেছিলেন। পর দিন নাকি তাঁর রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনার পর মানুষের মধ্যে আতঙ্ক আরও বাড়ে এবং ‘ওই দ্বীপে গেলে জীবিত কেউ ফেরে না’- এই ধারণাটা আরও চেপে বসে তাঁদের মধ্যে।
তবে ওই মৎস্যজীবীর ‘রহস্যময়’ মৃত্যুর পরেও ওই দ্বীপেই গিয়ে ডেরা বাঁধেন কয়েক জন। লাইটহাউস রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি পরিবার ওই দ্বীপে বেশ কয়েক বছর থাকতেন। ১৯০৯-’২০ পর্যন্ত ছিলেন তাঁরা। শোনা যায়, ঘরে ঢুকে পুরো পরিবারকে মেরে ফেলে সাপের দল।
কোথা থেকে আসল এই সাপ? এ নিয়েও কাহিনী আছে। শোনা যায়, জলদস্যুরা লুঠ করা সোনা এই দ্বীপে লুকিয়ে রাখত। কেউ যাতে সেগুলো হাতাতে না পারে সে জন্য কয়েকটি বিষাক্ত সাপ নিয়ে এসে দ্বীপে ছেড়ে দিয়েছিল তারাই। সেই সোনার লোভে বারেবারেই সেখানে গিয়েছে মানুষ। কিন্তু শোনা যায়, তারা কেউই ফেরেনি। তার পর সেই সাপের বংশবৃদ্ধি হতে থাকে। কয়েকটি সাপ থেকে কয়েক হাজার সাপে ভরে যায় গোটা দ্বীপ। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, খোঁজ নিয়ে দেখা গিয়েছে ওই সাপ গোল্ডেন ল্যান্সহেড। বিশ্বের অন্যতম বিষধর সাপ এটি।
এদিকে এই সাপকে বাঁচাতে পদক্ষেপ নিয়েছে ব্রাজিল সরকার। কারণ গোল্ডেন ল্যান্সহেড বিরল প্রজাতির। বিশ্ববাজারে এই সাপের চাহিদা থাকায় চোরা কারবারিদের হাতে থেকে রক্ষা করতে এবং সাপের কামড়ে যাতে সাধারণ মানুষের মৃত্যু না হয় তাই দ্বীপে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ব্রাজিল সরকার।