Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার

ব্যস্ততম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বড়গোবিন্দপুর আলী মিয়া ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়ের দুই তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থীই প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করছে। এতে মারাত্মক দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।

চান্দিনা উপজেলা সীমানার এক কোণে বিদ্যালয়টির অবস্থান। এর এক পাশে দেবিদ্বার উপজেলা, অপর পাশে বুড়িচং উপজেলার সীমানা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে চান্দিনা উপজেলার বড় গোবিন্দপুর গ্রামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। মহাসড়কের উত্তর পাশে দেবিদ্বার উপজেলার বরকামতা ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম, আর পূর্ব ও উত্তরে বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের আরো অন্তত পাঁচটি গ্রাম। ফলে তিন উপজেলার প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী নিয়মিত লেখাপড়া করছে ওই বিদ্যালয়টিতে। এদের মধ্যে প্রায় আট শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়মিত মহাসড়ক পারাপার হয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করছে।

বিভিন্ন সময় এই সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এই বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী পঙ্গুত্ব বরণ করেছে বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহানারা নাছরিন জানিয়েছেন। দুর্ঘটনা প্রবণ স্থানটিতে একটি ফুট ওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা আসবে বলে মনে করছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আবদুল্লাহিল রাফি বলে, ‘আমরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ, এখানে একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করে আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।’

নবম শ্রেণির ছাত্রী নাদিয়া সুলতানা বলে, ‘আমাদের অনেক ভাই-বোন সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পঙ্গু হয়েছে। দুইজন মারা গেছে। এখানে একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও চান্দিনা উপজেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সদস্য জাহানারা নাছরিন বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় ১২০০ শিক্ষার্থী। এদের দুই তৃতীয়াংশ সড়ক পার হয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিদ্যালয় শুরুর আগে এবং ছুটির সময় শিক্ষকরা লাল পতাকা উঁচিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপার করে দেন।’

প্রধান শিক্ষিকা আরো বলেন, ‘উপজেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সভায় আমি বিষয়টি তুলে ধরে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা পাওয়ার চেষ্টা করেছি। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় এনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করে দিলে আমরা উপকৃত হবো।’

চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সভাপতি এস এম জাকারিয়া বলেন, ‘জেলা সড়ক নিরাপত্তা কমিটির সভায় শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকির বিষয়টি আমি উপস্থাপন করেছি। এই উপজেলার তিনটি স্থানে স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য ফুট ওভারব্রিজ স্থাপনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এর মধ্যে এই বিদ্যালয়ের সামনে একটি ফুট ওভারব্রিজ স্থাপনের প্রস্তাবনাও রয়েছে।’

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top