ভুয়া জন্মদিন পালন ও মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করার অভিযোগে মানহানির দুই মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গ্রেপ্তার দেখাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত আগামী ৫ জুলাই পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। আজ বৃহস্পতিবার বকশিবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে ভুয়া জন্মদিন পালন মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম ও মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করার মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব এ আদেশ দেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত খালেদার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য নির্দেশ দেন এবং জামিনের আবেদন নথিভুক্ত করেন।
এদিন খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে বলেন, আজ দুই মামলায় খালেদার জামিন বিষয়ে আদেশের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। খালেদা চার মাস ধরে কারাগারে আটক রয়েছেন। পুলিশ চার মাসেও তার গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল করতে পারেনি তা তাদের ব্যার্থতা। সব কিছু বিবেচনায় খালেদার জামিন চাই। অপরদিকে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, দুই মামলাই খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাটি এখনও কার্যকর করা হয়নি। আগে পরোয়ানা কার্যকর করা হোক তারপর জামিন শুনানি।
এর আগে ২৫ এপ্রিল খালেদার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও জিয়া উদ্দিন জিয়া তার জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানির জন্য ১৭ মে দিন ধার্য করেন। অন্যদিকে খালেদাকে হাজির করানোর জন্য আবেদন করেন আইনজীবীরা। আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য একই দিন ধার্য করেন। মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করার অভিযোগে দায়ের মামলায় বলা হয় ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তিনি রাজাকার-আলবদর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের বাড়ি ও গাড়িতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
অন্যদিকে ভুয়া জন্মদিন পালনের মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর ম্যাট্রিক পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট। তার বিয়ের কাবিননামায় জন্মদিন ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
উল্লেখ্য, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর পুরান ঢাকার সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়েছে। ১৬ মে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। তবে তার বিরুদ্ধে অন্য মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকায় তিনি জামিনে মুক্ত হতে পারেনি।