প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, সমাজের সর্বস্তরে শান্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই দেশের উন্নয়নের পূর্বশর্ত। তিনি সমাজে শান্তি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে ভূমিকা পালনের আহবান জানিয়ে বলেন, ‘একদিন বাংলাদেশ বিশ্বে একটি উন্নত দেশ হিসেবে স্থান করে নিতে সক্ষম হবে- কেননা লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কখনও ব্যর্থ হতে পারে না।’
সকালে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
দারিদ্র্য এবং ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য শিক্ষার হার শতভাগে উন্নীত হওয়া জরুরি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বাংলাদেশের আরো অনেক সোনার ছেলের প্রয়োজন রয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেন। পরে ১০টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানগণ পৃথকভাবে স্ব-স্ব শিক্ষা বোর্ডের ফলাফলের কপি প্রধানমন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর করেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা বিভাগ সংক্রান্ত প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বরিশাল এবং বান্দরবন জেলা সংযুক্ত ছিল। প্রধানমন্ত্রী পরে জেলা দুটির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।
এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১০টি শিক্ষা বোর্ডের ২০ লাখ ২৬ হাজার ৫১৪ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৭৪ হাজার ১০৪ শিক্ষার্থী পাশ করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ৬২৯ জন।
এসএসসিতে আটটি শিক্ষাবোর্ডে পাশের হার ৭৯ দশমিক ৪০ শতাংশ, মাদ্রাসা বোর্ডে পাশের হার ৭০ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৭১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
এ বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ সারাদেশে মাদ্রাসা ও কারিগরিসহ ১০টি শিক্ষাবোর্ডের আওতায় সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের শিক্ষা খাতের উন্নয়নে তার সরকারের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি-উপবৃত্তি প্রদান করছে।
প্রধানমন্ত্রী এ বছর এসএসসি এবং সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান।
এ ছাড়া, বান্দরবন এবং বরিশালের শিক্ষার্থীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্সে মত বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে পার্বত্য জেলাগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য তার সরকারের আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।
দেশের সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলেও প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার প্রসারে আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন রয়েছে একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কে পাহাড়ি কে বাঙালি এটা আমাদের কাছে কোনো বিবেচ্য নয়, আমরা প্রত্যেকের শিক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে চাই।’
প্রধানমন্ত্রী এ সময় সব স্কুলে মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান