প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, খুব শিগগিরই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের সম্মান পেতে যাচ্ছে। আমরা কারো কাছে মাথা নত করে চলবো না। বঙ্গবন্ধু এই শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। আমরা সরকারে এসে বাংলাদেশের জনগণের মৃখে হাসি ফোটাবো, উন্নয়ন করবো, বিশ্বের বুকে দেশের নাম তুলে ধরবো। আমরা স্বাক্ষরতার হার বাড়িয়েছি। জাতির পিতার শুরু করা কাজ পুনরায় শুরু করেছি।
বুধবার বিকালে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ উপলক্ষ্যে আয়েজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা একাত্তরে গণহত্যা চালিয়েছিল তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন জাতির পিতা। কিন্তু স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনি যারা তাদেরকে পরবর্তীতে জাতির পিতার হত্যার পর পুনর্বাসিত করা হয়েছিল। জাতির পিতার নামটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারে না। ইতিহাস যেন বারবার ফিরে ফিরে আসে। ইতিহাস কেউ অস্বীকার করতে পারে না, নিশ্চিহ্ন করতে পারে না। ইতিহাসও প্রতিশোধ নেয়। ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেসকো স্বীকৃতি দিয়েছিল। আড়াই হাজার বছরের ভাষণের ইতিহাসের মধ্যে এই ভাষণ অন্যতম শ্রেষ্ট ভাষণ। ভাষণটি লিখিত ছিল না। সেটি ছিল জাতির পিতার সম্পূর্ণ মনের কথা। যে ভাষণের মধ্যে দিয়ে সংগ্রামের ইতিহাস, অত্যাচারের ইতিহাস, পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচার যেমন উঠে এসেছে তেমনি মুক্তিযুদ্ধের জন্য কী কী করণীয় সেগুলোও উঠে এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের স্বাধীনতায় বঙ্গবন্ধুর অবদানকে যারা অস্বীকার করে তাদেরকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আবেদন কোনোদিন শেষ হবে না। অথচ সেই ভাষণ এবং জাতির পিতার নামটাই একসময় মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়। আজকে ইউনেস্কোর প্রামাণ্য দলিলে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ স্বীকৃতি পেয়েছে। গত আড়াই হাজার বছরে যত ভাষণ পাওয়া যায় তার মধ্যে থেকে ৪১টি ভাষণকে তালিকাভুক্ত করা হয়। আর সেখান থেকেই সেরা ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি পায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ করা হয়েছিল, বঙ্গবন্ধু এই দেশ স্বাধীন করেছিলেন। জাতির পিতা একটি দেশ উপহার দিয়েছেন। এদেশের মানুষ ছিল শোষিত বঞ্চিত, তাদের রাজনৈতিক অধিকারের জন্য জাতির পিতা সংগ্রাম করেছেন। জাতির পিতার নির্দেশ মোতাবেই বাংলার মানুষ কাজ করেছে। জাতির পিতার নির্দেশে বাংলার মানুষ স্বাধীনতার জন্য ঝাপিয়ে পড়েছেন। বাংলার মানুষের জন্য তিনি জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। দেশ স্বাধীনের পর সাড়ে তিন বছরে একটি প্রদেশ, সেটাকে রাষ্ট্রে উন্নীত করা, বিশ্বের দেশগুলো থেকে স্বীকৃতি আনা, বঙ্গবন্ধু তা করেছিলেন। জাতির পিতা সারাজীবন বাংলার সাধারণ মানুষের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি শাসকরা বাংলার জনগণকে ক্ষমতায় আসতে দিতে চায়নি। সেই সময় জাতির পিতাকে বারবার হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু দেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের জন্য সারা জীবন যুদ্ধ করেছেন। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য, রাজনৈতিক মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন।