দুনিয়াজুড়ে সাড়া জাগানো বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের সোর্সখ্যাত সাবেক গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষক চেলসি ম্যানিং মার্কিন সিনেট নির্বাচনে অংশ নেবেন। উইকিলিকসের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের লাখ লাখ সামরিক নথি ফাঁস করে কারাদণ্ড ভোগ করেছিলেন ম্যানিং। আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মেরিল্যান্ড এলাকার সিনেট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তিনি বৃহস্পতিবার ডেমোক্র্যাট দলের মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছেন।
ইরাকে গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করার সময় উইকিলিকসের কাছে কয়েক লাখ মার্কিন সামরিক গোপন নথি ফাঁস করে দেন তখনকার ব্রাডলি ম্যানিং। ২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে সাত লাখ নথি ফাঁসের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হলে হরমোন থেরাপির পর চেলসি ম্যানিং নামে নারী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। বিচারে তাকে ৩৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত বছরের মে মাসে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার নির্বাহী আদেশে মুক্তি পান তিনি। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের স্বচ্ছতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও তৃতীয় লিঙ্গের সমতা নিয়ে সরব ছিলেন ম্যানিং।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গত বছরের আগস্টে ভোগ ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকার ম্যানিং বলেছিলেন, কোথায় আমি যেতে চাই তা নির্ধারণে পরবর্তি ছয় মাসই আমার লক্ষ্য। ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হতে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন দাখিল করেছেন ম্যানিং। ডেমোক্রাটদের শক্ত ঘাটি বলে পরিচিত মেরিল্যান্ডে তাকে লড়তে হবে ৭৪ বছর বয়সি বর্তমান সিনেটর বেন কার্ডিনের সঙ্গে। বেন কার্ডিন ২০০৭ সাল থেকে ওই আসনের সিনেটর নির্বাচিত হয়ে আসছেন।
বেন কার্ডিন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে রাশিয়ার সংযোগ নিয়ে বেশ সরব ভূমিকা রেখে থাকেন। এছাড়া তিনি সিনেটে ফরেন এফেয়ার্স কমিটির সিনিয়র সদস্য।
গত বছরের মে মাসে মুক্তি পাওয়ার পর এক বিবৃতিতে ম্যানিং জানিয়েছিলেন, ‘আমি ভবিষ্যতের দিকেই মনোযোগ দিচ্ছি। অতীতের চেয়ে ভবিষ্যৎ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তাকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছিলেন ম্যানিংয়ে দেওয়া কারাদণ্ডের সিদ্ধান্ত ভুল। তবে বর্তমানি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে ‘অকৃতজ্ঞ বিশ্বাসঘাতক’ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন তাকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া উচিত নয়।মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্ক উসকে দিতেই নথি ফাঁস করেছিলেন বলে জানান ম্যানিং। তবে মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি এসব নথি ফাঁস হওয়ার কারণে তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। চেলসি ম্যানিং মার্কিন সিনেট নির্বাচনে অংশ নেবার বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ সারা জাগিয়েছে।