বাড়তি খরচ করে বিদেশে না গিয়ে এখন থেকে দেশেই কিডনি, লিভারসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন করতে পারবেন রোগীরা। মঙ্গলবার দশম জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনে মানবদেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন পাসের ফলে এই সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে অপচিকিৎসা বন্ধের পাশাপাশি এ সংক্রান্ত ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
১৯৯৯ সালে মানব দেশে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইন ছিল দেশে। তবে সময় ও চিকিৎসার প্রেক্ষাপট বদলে যাওয়ায় মঙ্গলবার দশম জাতীয় সংসদের ১৯ তম অধিবেশনে এটিকে যুগোপযোগী করে পাস করা হয়েছে। এর আগে জাতীয় সংসদে এই আইনের কার্যকারিতা তুলে ধরেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের যে আক্রান্ত রোগীরা তারা এখানে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপন করতে পারে এজন্য এই আইনটি করা হয়েছে। আপনারা যদি দয়া করে এই আইনটির বিল পাশ করে দেন তাহলে আসলেই যারা অসুস্থ তারা চিকিৎসা নিতে পারতো।’
বেশ কয়েক বছর হলো দেশে কর্ণিয়া, বোনম্যারো, কিডনি ট্রান্সপ্লান্টের মতো সংবেদনশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ চিকিৎসা সফল ভাবে সম্পন্ন করছেন বাংলাদেশের চিকিৎসকেরা। এছাড়াও লিভার ট্রান্সপ্লান্টের কাজও শুরু হয়েছে কয়েক বছর ধরে। ভবিষ্যতে দেশের মাটিতেই লাং ও হার্ট প্রতিস্থাপনও সম্ভব হবে। পাশাপাশি মৃত ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গও অন্যের শরীরে সংযোজনের বিধান থাকায় ডোনারের সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. কাজী রফিকুল আবেদীন বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে নেয়া যাবে এতটুকুই ছিলো, তবে এটা কাকে দেয়া যাবে, কিভাবে দেয়া হবে এটার জন্য একটি জাতীয় কিমিটির প্রয়োজন হয়।’
আইন অনুযায়ী কোনো হাসপাতাল সরকারের অনুমতি ছাড়া অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন করতে পারবে না। তবে সরকারি হাসপাতালে বিশেষায়িত ইউনিটে অপারেশনের ক্ষেত্রে অনুমতির প্রয়োজন হবে না।
আইন পাসের ৬০ দিনের পর অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে।