চলতি মাসেই শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ত্রিদেশীয় সিরিজ। ঘরের মাঠে দুর্দান্ত পারফরমেন্স বাংলাদেশের। সে ধারা বজায় রাখতে কঠোর পরিশ্রম করছেন তারা। হেড কোচ না থাকায় ক্যাম্পিংয়ে আছেন একাধিক কোচ। এখন দল নির্বাচনের পালা। দলে জায়গা হতে পারে কাদের এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা। আজ দল ঘোষণার কথা রয়েছে বিসিবির।
কারা থাকতে পারেন সম্ভাব্য সে দলে?
ধারণা করা হচ্ছে, এবার দলে রাখা হতে পারে সর্বশেষ ২০১৫ সালে বিশ্বকাপ খেলা এনামুল হককে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ভালো পারফরমেন্স করেছেন এই ব্যাটসম্যান। গত বছর ৬৩.৩৫ গড়ে ১০৭৭ রান করেছেন তিনি। ঢাকা ডিভিশনের বিপক্ষে করেছেন ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন। এছাড়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১৬ ইনিংসে করেছেন ৫৯৬ রান। আর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) করেছেন ২০৬ রান। তার স্ট্রাইক রেট ছিল ১২৮.৭৫।
এছাড়া দলে থাকতে পারেন হাসি মুখের ঘাতক মোস্তাফিজুর রহমান। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পায়ে ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি তিনি।
দলে জায়গা পেতে পারেন নাসির হোসেনও।
তবে বাদ পড়তে পারেন টপ-অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার ও লিটন দাস এবং পেসার তাসকিন আহমেদ।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য স্কোয়াড : মাশরাফি মর্তুজা (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মাহমুদুল্লাহ, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, এনামুল হক, নাসির হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ও নাজমুল ইমলাম।
তামিমের সেঞ্চুরি : জিতল লাল দল
সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের সেরা প্রস্তুতির জানান দিলেন তামিম ইকবাল। মাশরাফি বিন মর্তুজার সবুজ দলের বিপক্ষে ১১৯ বলে ১০৪ রানের চমৎকার এক ইনিংস খেলেন বাংলাদেশের এই ড্যাশিং ওপেনার। সেঞ্চুরির পর স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। বাঁ-হাতি এই ওপেনারের সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ৭ উইকেটে ৩২০ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় সাকিব আল হাসানের লাল দল। জবাবে খেলতে নেমে মাশরাফির সবুজ দল সব ক’টি উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রানের বেশি করতে না পারলে ১৩৭ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তামিম বাহিনী। ৯ জানুয়ারি নিজেদের মধ্যে আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ক্রিকেটাররা।
ত্রিদেশীয় সিরিজকে সামনে রেখে ৩২ ক্রিকেটারকে নিয়ে গত মাস থেকেই ক্যাম্প চলছে। চূড়ান্ত দল ঘোষণা করা হবে দু-এক দিনের মধ্যেই। তার আগে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়েকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ সামনে রেখে গতকাল নিজেদের মধ্যে ভাগ হয়ে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ দল। লাল দলের নেতৃত্বে ছিলেন সাকিব আল হাসান ও সবুজ দলের নেতৃত্বে মাশরাফি বিন মর্তুজা।
মিরপুর শেরেবাংলায় দিবারাত্রির এই ম্যাচে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে লাল দল। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয় শুরুটা দেখে শুনেই করেছিলেন। মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ব্যক্তিগত ২১ রানে বিজয় ফিরে গেলেও আরেক প্রান্ত আগলে রাখেন তামিম। আর ব্যক্তিগত ২৪ রানে তাসকিন আহমেদের বলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের হাতে ধরা পড়েন ওয়ান ডাউনে নামা সাকিব। তাসকিনের বলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। পরপর দুই বলে সাকিব-মুশফিক সাজঘরে ফেরায় বিপাকে পড়ে লাল দল। সেখান থেকে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন তামিম। সেঞ্চুরিও তুলে নেন এই বাঁ-হাতি। ১১৯ বলে ১০টি চার ও দুই ছক্কায় ১০৪ রান করে স্বেচ্ছায় মাঠ ছাড়েন।
মাহমুদুল্লাহ ৭৫ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলে ফিরেন সাইফ উদ্দিনের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে। তামিম দারুণ পারফর্ম করলেও সুবিধা করতে পারেননি সাকিব (২৪), মুশফিকুর রহিম (০) ও সাব্বির রহমান (২০)। সবুজ দলের মোস্তাফিজ, তাসকিন আহমেদ ও সাইফউদ্দিন প্রত্যেকে দুটি করে উইকেট পান। ভালো বোলিং করলেও মাশরাফি ছিলেন উইকেট শূন্য।
৩২১ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে সর্বক্ষণ হারের মুখেই ছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার সবুজ দল। শেষ পর্যন্ত ৪৩.২ ওভারে সব ক’টি উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান করেছে তারা। মোহাম্মদ মিঠুন করেন ৩২ রান। নাসির ২৫, সৌম্য ২৮, নাজমুল হাসান শান্ত ১৩ রান করে আউট হন। লিটন কুমার দাস ৭ এবং আরিফুল ৯ রানের বেশি এগোতে পারেননি।
বিসিবি সবুজ দল : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মোহাম্মদ মিথুন, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাসির হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, আবু জায়েদ রাহি, মোস্তাফিজুর রহমান ও নাজমুল হোসেন অপু।
বিসিবি লাল দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, আরিফুল হক, তাসকিন আহমেদ, সানজামুল ইসলাম, আবু হায়দার রনি, রুবেল হোসেন ও আবুল হাসান।