কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুর এলাকায় যাত্রীবাহী নৈশকোচে পেট্রলবোমা হামলায় আট যাত্রীকে হত্যা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি-জামায়াতের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় ৫৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন কুমিল্লার একটি আদালত।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৫নং আমলি আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারক বেগম জয়নব বেগম এ আদেশ দেন।
গত বছরের ১৬ নভেম্বর জেলা ডিবির ইন্সপেক্টর ফিরোজ হোসেন ওই মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী, মনিরুল হক চৌধুরী, জামায়াত নেতা ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহেরসহ ৭৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মঙ্গলবার শুনানী শেষে আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে ওই ৫৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।
আজ শুনানিকালে জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট শাহজাহানসহ বিএনপি-জামায়াতের স্থানীয় ২০ নেতাকর্মী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। খালেদা জিয়াসহ কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতারা আদালতে উপস্থিত না থাকায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধ চলাকালে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আইকন পরিবহনের একটি নৈশ কোচ (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৪০৮০) চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজারসংলগ্ন জগমোহনপুর নামক স্থানে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা বাসটি লক্ষ্য করে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে বাসটির ভিতরে-বাইরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে উঠে। এ সময় বাসে ঘুমিয়ে থাকা যাত্রীরা কোনো কিছু বুঝে উঠার আগে আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে সাতজন ও হাসপাতালে নেয়ার পর একজনসহ মোট আটজন ঘুমন্ত যাত্রী মারা যায়।
এ ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে পরদিন ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ তৎসহ ১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ১৫ (৩)/২৫-ডি ধারায় একটি ও ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক আইনের ৩ ও ৪ ধারায় একটিসহ থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের নির্দেশে আট যাত্রী হত্যা মামলাটি কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) স্থানান্তর করা হয়। গত বছরের ১৬ নভেম্বর আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়।