বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান এবং ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক মাহফুজুল হক মারজানের বিরুদ্ধে লেখা চুরির অভিযোগ তদন্তের জন্য নির্দিষ্ট সময় এক মাস শেষে আরো দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। তদন্ত কমিটির প্রধান জানিয়েছেন, এতে আরো সময় লাগবে।
অভিযোগ আছে, এ দুই শিক্ষক তাঁদের একটি গবেষণা নিবন্ধে মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামে একটি নিবন্ধ থেকে পাঁচ পৃষ্ঠা লেখা হুবহু চুরি করেছেন।
অভিযোগ ওঠার পর বিষয়টি তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমদকে প্রধান করে কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিনি গতকাল রোববার বলেন, ‘আমরা তদন্ত করছি। শেষ হলে যথাসময়ে জমা দেবো।’
নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ না হওয়ার বিষয়ে কমিটিপ্রধান বলেন, ‘আমি ওই সময়ের মধ্যে ১০ দিন বাইরে ছিলাম। তা ছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরাও নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন। সে কারণেই হয়নি।’
যদিও লেখা চুরির অভিযোগ ওঠার পর তা অস্বীকার করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক সামিয়া রহমান। এ ঘটনার জন্য তিনি ক্রিমিনোলজি বিভাগের শিক্ষক মারজানের ওপর দোষ চাপান।
জানা যায়, সামিয়া রহমান ও মাহফুজুল হক মারজানের গবেষণা নিবন্ধ ‘অ্যা নিউ ডাইমেনশন অব কলোনিয়ালিজম অ্যান্ড পপ কালচার : এ কেস স্টাডি অব দ্য কালচারাল ইম্পেরিয়ালিজম’ গত বছরের ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যাল সায়েন্স রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়। এই নিবন্ধে ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোর ‘দ্য সাবজেক্ট অ্যান্ড পাওয়ার’ নামে একটি নিবন্ধ থেকে পাঁচ পৃষ্ঠা হুবহু চুরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ১৯৮২ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নাল ‘ক্রিটিক্যাল ইনকোয়ারি’র ৪ নম্বর ভলিউমে ফুকোর ওই নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল।
এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে চার সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। চার সপ্তাহের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ২৬ অক্টোবর। যদিও যথাসময়ে তদন্তের কাজ শেষ করা হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন কমিটির প্রধান অধ্যাপক নাসরিন আহমদ।
কমিটির আরেক সদস্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে যে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে, সে বিষয়ে আমি ভালো বলতে পারব না। কেননা, আমি দেশের বাইরে ছিলাম। গত ৬ তারিখে কমিটির একটা মিটিং (সভা) ছিল, তাতেও আমি উপস্থিত হতে পারিনি। তাই এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধানই ভালো বলতে পারবেন।’
শিক্ষক সামিয়া রহমান একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের হেড অব কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সের পদে ফ্রিল্যান্স হিসেবে কাজ করেন। তবে নিয়ম অনুযায়ী, কোনো শিক্ষক অনুমতি নিয়ে আরো দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মোট ছয় ঘণ্টা সময় খণ্ডকালীন কাজ করতে পারেন। সেখান থেকে পাওয়া বেতনের ১০ শতাংশ তাঁকে নিজের প্রতিষ্ঠানে দিতে হয়। কিন্তু তিনি এসব নিয়ম মানেন না বলেও অভিযোগ আছে।