মূলধন সংকটের কারণে চাহিদামত ঋণ সরবরাহ করতে পারছে না হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন। গ্রাহকদের দাবি-আবাসন খাতে ঋণ দেয়ার জন্য রাষ্ট্রীয় এ প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারলে নানাভাবে উপকৃত হতেন তারা। করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, অধ্যাদেশ সংশোধনসহ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। অনুমোদন পাওয়া গেছে আরও ১০০টি শাখার।
রাজধানীসহ সারাদেশে প্রতিবছরই বাড়ছে আবাসন খাতের পরিধি। পুরনো বাড়ি সংস্কার আর নতুন বাড়ি তৈরির এ কাজে অনেকেই চড়া সুদে বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের থেকে ঋণ নেন। অনেকে আবার বেশি হারে সুদের ভয়ে বাড়ি সংস্কার বা নির্মাণ করতেও ব্যর্থ হন। তাই তুলনামূলক কম সুদের সুযোগ পেতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে আসেন গ্রাহকরা।
এক গ্রাহক বলেন, ‘ছেলে-মেয়ে বড় হয়েছে। তাদের লেখাপড়া শেষ। এখন চিন্তা করলাম, বাড়িটা করে যাই।’
অপর একজন বলেন, ‘২৫ লাখ টাকা নিয়েছি বাড়ি তৈরির জন্য। বাড়ির কাজ শেষ হয়েছে। ওনারা আমাদের সুযোগ দিয়েছেন যে, এক বছর পর থেকে কিস্তি শুরু হবে।’
১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনও লোকবল সংকট নিয়েই চলছে প্রতিষ্ঠানটি। এখন পর্যন্ত ঢাকায় ৭ টিসহ মোট কার্যালয় মাত্র ২৯ টি। শাখা সংকট ও ঋণে দীর্ঘসূত্রিতারও অভিযোগ রয়েছে। তবে কর্মকর্তাদের দাবি, বৈধ কাগজপত্র থাকলে আওতাভুক্ত এলাকায় সর্বোচ্চ ২১ দিনেই ঋণ পাওয়া সম্ভব।
বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের জোনাল ম্যানেজার মো. আলাউদ্দীন বলেন, ‘হাউজ বিল্ডিং সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে থাকে। সম্প্রতি সুদের হার সাড়ে আট শতাংশে কমিয়ে এনেছে।’
তবে প্রতিষ্ঠানটির উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. জসিম উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের এখানে লোকবলের ঘাটতি রয়ে গেছে। আমাদের যে সাংগঠনিক কাঠামো আছে সে অনুযায়ী আমাদের লোকবল পঞ্চাশ শতাংশেরও কম আছে।’
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেবাশীষ চক্রবর্তী জানান, ১০০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধন করার পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। সরকারের কাছ থেকে ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিতরণ করছেন তারা।
দেবাশীষ চক্রবর্তী বলেন, ‘১৯৯২ সালের পর ক্যাপিটাল বাবদ আমরা কোন টাকা পাইনি। আমরা একহাজার কোটি টাকা অথরাইজড ক্যাপিটাল করার প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা বর্তমানে বছরে ঋণ দিচ্ছি চারশো কোটি টাকা। পরিকল্পনা করেছি যে, আইডিবির লোণটা পেলে আগামীতে ঋণের পরিমাণটা বাড়িয়ে ছয়শ থেকে সাতশ কোটি টাকা করবো।’
কর্মকর্তারা জানান, কৃষিজীবী, বস্তিবাসী, কম আয়ের শ্রমিক, প্রবাসীদের জন্য কয়েকটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। আইডিবি থেকে ৮০০ কোটি ঋণ সহায়তার মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে পরিকল্পিত আবাসন নিশ্চিত করা হবে।