Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

খুলে দেওয়া হয়েছে মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার

ডেস্ক রিপোর্ট :

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার অবশেষে খুলে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মগবাজার-মৌচাক-মালিবাগের যানজট কমার পাশাপাশি এসব এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের ভোগান্তির অবসান হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বহুল আকাঙ্ক্ষিত এ ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি ফ্লাইওভার-রাস্তাঘাট ব্যবহারে যত্নবান এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের ঘোষণার পরপরই গণভবন প্রান্ত থেকে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ সময় মৌচাক প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, ঢাকা উত্তরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র উসমান গণি ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতারা।

এর আগে উদ্বোধন উপলক্ষে বুধবার মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নানা রংয়ের পতাকা ছাড়াও দৃষ্টিনন্দন কাপড়ে সাজানো হয়। পুরো ফ্লাইওভারে বিভিন্ন রংয়ের লাইটিং করা হয়।

মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প ২০১১ সালে একনেকে চূড়ান্ত হয়। ২০১৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ফ্লাইওভারের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।

শুরুতে এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। পরে নকশায় পরিবর্তন আনা হয়। যে কারণে শেষ পর্যন্ত ব্যয় বাড়তে বাড়তে ১ হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকায় গিয়ে পৌঁছে। এর মধ্যে সরকার অর্থায়ন করেছে ৪৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। সৌদি ফান্ড ফর ডেভলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট (ওএফআইডি) দিয়েছে ৭৭৬ কোটি ১৬ লাখ টাকা। প্রতি মিটারে উড়ালসড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৩ লাখ টাকা।

তিন ভাগে শেষ হয়েছে এ ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। একটি অংশে রয়েছে সাতরাস্তা থেকে মগবাজার হয়ে হলি ফ্যামিলি পর্যন্ত, আরেকটি অংশ শান্তিনগর থেকে মালিবাগ হয়ে রাজারবাগ পর্যন্ত এবং শেষ অংশটি বাংলামোটর থেকে মগবাজার হয়ে মৌচাক পর্যন্ত।

২০১৬ সালের ৩০ মার্চ ফ্লাইওভারের হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে সাতরাস্তা পর্যন্ত অংশ যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর খুলে দেওয়া হয় ইস্কাটন-মৌচাক অংশ। তৃতীয় ধাপে গত ১৭ মে ফ্লাইওভারের এফডিসি মোড় থেকে সোনারগাঁও হোটেলের দিকের অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। আজ শান্তিনগর-মালিবাগ-রাজারবাগ অংশ এবং বাংলামোটর-মগবাজার-মৌচাকের অংশ যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলো।

এ ফ্লাইওভারে ওঠানামার জন্য ১৫টি র‌্যাম্প রয়েছে। তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, বাংলামোটর, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং শান্তিনগর মোড় থেকে ফ্লাইওভারে ওঠা-নামার ব্যবস্থা রয়েছে।

প্রায় নয় কিলোমিটার দীর্ঘ তিনতলা বিশিষ্ট চার লেনের এই ফ্লাইওভার এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে, যা রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্পও সহ্য করতে পারবে। এর প্রতিটি পিলার ১৫০ মিটার গভীর পর্যন্ত করা হয়েছে। দেশে এ পর্যন্ত যে কয়টি ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে, তার মধ্যে দৈর্ঘ্যের দিক থেকে এটি দ্বিতীয়। প্রথম স্থানে আছে ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার (গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী)।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top