Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

যেখানে বাবা ট্রাফিক পুলিশ!সেখানেই ছেলের মৃত্যু !

যেখানে বাবা ট্রাফিক পুলিশ!সেখানেই ছেলের মৃত্যু !

অনলাইন ডেস্ক: ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির একটি ব্যস্ত সড়ক। সেখানে ভীষণ ব্যস্ত হয়ে ট্রাফিক পুলিশের কাজ করছেন বৃদ্ধ এক ব্যক্তি। প্রথম দেখায় যে কেউ অবাক হতে পারেন। কারণ সত্তরোর্ধ্ব কোনো ব্যক্তির তো ট্রাফিক পুলিশ হিসেবে কাজ করার বয়সই পার হয়ে গেছে।

তবে যাঁরা এই পথ নিয়মিত ব্যবহার করেন, তাঁরা জানেন যে ঘটনাটা আসলে কী। এই ব্যক্তির নাম গঙ্গারাম। ছয় বছর আগে দিল্লির এই সড়কেই প্রাণ দেন তাঁর একমাত্র সন্তান মুকেশ কুমার (৪০)। ট্রাফিক নিয়ম না মানা একটি বাহনই মুকেশের মৃত্যুর কারণ। এরপরই গঙ্গারাম সিদ্ধান্ত নেন। ট্রাফিক আইন অমান্য করে আর কাউকে চলতে দেবেন না। এভাবে আর কারো মৃত্যু তিনি মেনে নেবেন না।

আর কাউকে যেন এভাবে জীবন দিতে না হয়, সে জন্য ছেলের মৃত্যুর ঘটনাস্থলেই যানবাহন নিয়ন্ত্রণের কাজ করতে শুরু করেন তিনি। আর এই কাজ করেই পার করে দিয়েছেন জীবনের ছয়টি বছর।

প্রথম প্রথম দুই বেলা দুই ঘণ্টা করে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের কাজ করতেন গঙ্গারাম। বাড়িতেও তাঁর মন বসত না। তাই ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এই কাজের সময়। এখন তো বাড়ি যেতে রাত প্রায় ৮টা বেজে যায়।

দিল্লি পুলিশের বেতনভুক্ত কর্মচারী নন সত্তরোর্ধ্ব গঙ্গারাম। কিন্তু রোজ সকালে ট্রাফিক পুলিশের পোশাক পরে, ব্যাজ লাগিয়ে হাজির হয়ে যান কাজে। ওই মোড়ে যে ট্রাফিক পুলিশরা দায়িত্ব পালন করেন, তাঁরাই চাঁদা তুলে গঙ্গারামের জন্য পোশাক বানিয়েছেন।

ভারতের গণমাধ্যম আউটলুককে গঙ্গারাম বলেন, ছেলে মুকেশই ছিল তাঁদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। ফলে তাঁর মৃত্যুর পর অকুল পাথারে পড়ে পরিবারটি। পরে পরিবারের হাল ধরতে এগিয়ে আসেন মুকেশের স্ত্রী। তিনি একটি হাসপাতালে চাকরি নেন বলেও জানান গঙ্গারাম।

এই কাজের জন্য দিল্লি পুলিশের কাছ থেকে কোনো মাসিক ভাতা পান না গঙ্গারাম। তবে তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুরস্কৃত করেছে দিল্লি পুলিশ। সেই সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালও তাঁর সঙ্গে দেখা করে পুরস্কার দিয়েছেন। পেয়েছেন ট্রফি, চাদর।

শুধু তাই নয়। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে গঙ্গারামকে নিয়ে প্রতিবেদন। কিছুদিন আগে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘গঙ্গারামের সামনে কখনো লাগে না জ্যাম।’

কেন করছেন এই কাজ, জানতে চাইলে গঙ্গারাম বলেন, ‘মানুষ দেশের জন্য জীবন দিয়ে দেয় আর আমি তো স্রেফ পরিশ্রম করছি। মানুষ আমাকে কত সম্মান করে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top