ছেলেরা পুলিশ, মেয়ে প্রধান শিক্ষক অথচ মা ভিক্ষুক!
এ,কে,এম শফিকুল ইসলামঃ বরিশালে সন্তানের অবহেলায় গুরুতর অসুস্থ বৃদ্ধা মা মনোয়ারা বেগমের চিকিৎসাসহ সকল ব্যায়ভার গ্রহণ করেছে বরিশাল পুলিশ। একই সাথে সামর্থ্যবান ছয় সন্তান থাকার পর ভিক্ষাবৃত্তিতে নামা মনোয়ারা বেগমের সুচিকিৎসা নিশ্চিত না হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতেও গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি। তদন্তে প্রমাণ মিললে মা চাইলে সন্তানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিভাগের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম।
এদিকে মায়ের প্রতি অবহেলার বিষয়টি অস্বীকার করে সন্তানেরা দায় চাপালের একে অন্যের ওপর। অসুস্থ মনোয়ারা বেগমের পাঁচ ছেলের একজন পুলিশের কনস্টেবল, একজন এসআই এবং আরেকজন অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার। বাকি দুই ছেলেও কাটাচ্ছেন সচ্ছল জীবন। এছাড়া তার মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মরিয়মকে উপজেলা শিক্ষা অফিসে এরই মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সামর্থবান ছয় সন্তানের জননী মনোয়ারা বেগম। প্রত্যেক সন্তানই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হলেও দুইবেলা দুইমুঠো খাবারের জন্যে ৮২বছর বয়সে তাকে বেছে নিতে হয়েছিলো ভিক্ষা বৃত্তি। এমনকি দুর্ঘটনায় পা ভেঙে গুরুতর অবস্থায় বাড়িতে পড়ে থাকলেও টানা পাঁচ-মাসে তাঁর কোন সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেননি স্বজনরা। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এগিয়ে আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। ১৮ সেপ্টেম্বর মনোয়ারা বেগমকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।
শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজের অর্থোপেডিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো.আবুল হোসেন বলেন, বর্তমান তার যে শারীরিক অবস্থা তিনি অপারেশনের জন্য আনফিট। আমরা চেষ্টা করবো তার অপারেশনের ব্যবস্থা করা যায় কিনা ?
বরিশাল ৩-সংসদ শেখ টিপু সুলতান জানায়, তাঁর সন্তানের অবহেলা কারণে তিনি ভিক্ষাবৃত্তি করতো। পরবর্তীতে তাঁর কোন সুচিকিৎসা না হওয়ার কারণে আমি তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি।
এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বরিশাল পুলিশ। মনোয়ারা বেগমের আজীবনের খরচ সরকারের পক্ষ থেকে বহন করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার ।
বরিশালের রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, তার চিকিৎসার জন্য সমস্ত খরচ ররিশাল মেডিকেল কলেজ থেকে বহন করা হবে। এছাড়াও কোন প্রকার অর্থের প্রয়োজন হলেও সেটা বাংলাদেশ পুলিশ তাঁদের পক্ষ থেকে বহন করবে।