সাত বছরেও চালু করা যায়নি দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি। ফলে ভর্তি মৌসুমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আলাদা আলাদা পরীক্ষা দিতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতিসহ নানা হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। এর কারণ হিসেব শিক্ষাবিদরা বলছেন, ভর্তি ফরম বিক্রির কোটি টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। আর বিশ্ববিদ্যালয় শিকক্ষদের এ সেচ্ছ্বাচারিতার বিপরীতে অসহায়ত্বের সুর খোদ শিক্ষামন্ত্রীর কণ্ঠে।
ভর্তির মৌসুম এখন। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযুদ্ধ। অথচ, এ সুযোগ পেতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্ন ভিন্ন ভর্তি ফরম, এমনকি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে একাধিক ইউনিটের ফরম কিনে পরীক্ষা দিতে হয় ভর্তিচ্ছুদের। যেতে হয় দেশের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে। ভোগান্তি যেন তাই সীমাহীন।
অথচ ২০১০ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাব করেছিলো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলাতেও ক্লাস্টার বা গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়ার। তা মানছে না কোন বিশ্ববিদ্যালয়। অভিযোগ রয়েছে, ফরম বিক্রি বাবদ আয় করা কোটি কোটি টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিতেই গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষায় আগ্রহী নয় এক শ্রেনীর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকেরা।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, শিক্ষকরা অনেক টাকা পায়। আমি সব সময় সাংবাদিকদের বলে আসছি, কোন শিক্ষক কি করে কত টাকা পায় তার একটা তালিকা করেন আপনারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ও উপাচার্যরা চাইলে এটা করা সম্ভব ছিল।
ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, এখান থেকে যা অর্জন হয় তা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটে চলে যায়। আমি বলবো না কত টাকা পায়ছেন। আপনারা নিজে শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করেন তাহলেই বুঝতে পারবেন তারা কত পায়। তাতে আপনাদের লজ্জা লাগবে শুনে।
এ ব্যাপারে অসহায় তাই শিক্ষামন্ত্রীও। নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ক্ষমতা আমাদের হাতে নাই। ক্ষমতা আইন করে তাদের হাতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কাজ শুধুমাত্র শতভাগ টাকা দেওয়া আর শূন্যভাগ ক্ষমতা নিয়ে বসে থাকা।
দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন প্রায় ৬০ হাজার। কাঙ্খিত উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে তাই চলতি বছর পাস করা ৮ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে এ প্রতিযোগিতায়।