বাজারের মিনিকেট চালের কদর সবারই জানা। নিম্ন-মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারে প্রতিনিয়ত খাদ্য তালিকায় থাকে মিনিকেট চাল। মিনিকেট চালের চাহিদার কথা জানা থাকলেও ভোক্তাদের জানা নেই, মিনিকেট চাল কিনে কিভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। পারতপক্ষে মিনিকেট বলতে ধানের কোনো জাত নেই। যে চাল বাজারে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো আসলে পলিশিং মেশিনে কাটা মোটা চাল।
এ প্রসঙ্গে কৃষিবিদ আব্দুল মজিদ বলেন, “দেশের নানা অঞ্চলে ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট উদ্ভাবিত জাতগুলোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার ভারতীয় জাতের ধান চাষ হয়। কিন্তু মিনিকেট নামে ধানের কোনো জাত দুদেশের কোথাও নেই। এ নামটি একটি গুজব।”
সূত্র জানা যায়, বরিশালে বালামের সুনাম ছিল সারা ভারত উপমহাদেশ জুড়ে। কালের বিবর্তনে এসব সরু জাতের ধানচাষ উঠে যায়। তবে সরু চালের সন্ধান করতে থাকে ক্রেতারা। এসময় বাজারে কথিত মিনিকেটের আর্বিভাব ঘটে। ক্রেতারা লুফে নেয় এ সরু জাতের চাল। সুযোগ বুঝে একশ্রেণীর মিলমালিক মাঝারি সরু বি আর- ২৮, বিআর- ২৯ ও বি আর-৩৯ জাতের ধান ছেঁটে মিনিকেট বলে বাজারজাত করতে শুরু করে। বর্তমানে সারাদেশে চিকন চাল বলতে এখন মিনিকেটই বোঝায়, যার দামও চড়া।
পলিশিং মেশিনের সাহায্যে মোটা চাল কেটে মিনিকেট চাল তৈরি করার ফলে এটি কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পলিশিং মেশিনে কাটা এই চাল মানবদেহে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।’ বাংলাদেশের অসাধু কিছু চাল ব্যবসায়ীর মিনিকেট প্রতারণা থেকে বাচতে সরকার ও জনগণ উভয়কেই সচেতন হওয়ার আহ্বান করেছেন কৃষিবিদ ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
কৃষিবিদ ড. মোঃ. শমসের বলেন, “মিনিকেট নামে কোনো জাতের ধান বাংলাদেশে নেই। এটি প্রতারণা। এ প্রতারণার হাত থেকে বাঁচতে হলে সচেতনতার পাশাপাশি আমাদের সৎ হতে হবে। চাল ব্যবসায়ীরা আসল পরিচয়ে চাল বিক্রি করলে ক্রেতারা প্রতারিত হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের চাল বাজারগুলো ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে তারা ইচ্ছা মতো চালের নাম দিয়ে বাজারে বিক্রি করছে।”