ফেনীর উপকূলীয় উপজেলা সোনাগাজীতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমার থেকে আসা একই পরিবারের ১৩ রোহিঙ্গা সদস্য। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে প্রথমে কক্সবাজারের উখিয়ায় রাস্তার পাশে আশ্রয় নেয় তারা। সেখান থেকে সাময়িকভাবে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানান তারা। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি মানবিকভাবে দেখার পাশাপাশি রেখেছে কঠোর নজরদারিতে।
নিজেদের ভিটেমাটি ছেলে জীবন বাঁচাতে টানা ১৪ দিন পায়ে হেটে মিয়ানমার থেকে স্বজনদের সাথে বাংলাদেশে আসা কয়েকজন রোহিঙ্গা শিশুকে খেলাধুলা করতে দেখা যায় বাড়ির আঙিনায়। গত ১০ সেপ্টেম্বর উপজেলার চর দরবেশ ইউনিয়নের চর শাহবিক্রি গ্রামের মাতব্বর বাড়ির আব্দুর রশিদের ঘরে আশ্রয় নেয় তার মেয়র শ্বশুর পক্ষের ১৩ জন রোহিঙ্গা সদস্য। এদের মধ্যে তিন জন নারী ও সাত জন শিশু। আশ্রয় গ্রহণকারী সবাই মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের তাংবাজার থানাধীন বাইচিথাংমুরি ইউনিয়নের চাঙ্গানা গ্রামের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসার দুঃর্বিসহ বর্ণনার পাশাপাশি তারা জীবনের নিরাপত্তা পেলে আবারো ফিরে যেতে চান মিয়ানমারে।
সোনাগাজীর চরদরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টু বলেন, ‘এখানে ওসি সাহেব, ইউএনও সাহেব থেকে শুরু করে সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তারা এসে দেখেশুনে এটাকে তদারকি করছেন।’
স্থানীয়দের মাধ্যমে গ্রামে রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়ার খবরে সেখানে ছুটে যান প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। মানবিক সহায়তা দেবার পাশাপাশি চলমান রোহিঙ্গা নিবন্ধনের আওতায় তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে বলে জানায় উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহজুর রহমান বলেন, ‘তারা প্রায় ১৫ দিন হেটে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। শারীরিকভাবে তারা এখনো ক্লান্ত। আর কয়েকদিন বিশ্রাম নিক। তারপরে আমরা নিবন্ধনের জন্য তাদের উখিয়ায় পাঠাবো।’
২০১২ সালে চট্টগ্রামে গার্মেন্টসে চাকরি করতে গিয়ে একি বছর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আনোয়ারের সাথে পরিচয় ও বিয়ে হয়েছিলো আব্দুর রশিদের মেয়ে শিউলি আক্তারের। তাদের দাবি, এরপর তারা কোনদিনই মিয়ানমারে যাননি।