মানবাধিকার কমিশন
‘প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে’
রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় হোটেল দ্য রেইন ট্রি পরিদর্শন করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত কমিটি। এ সময় সদস্যরা দাবি করেন, সেখানে তাঁরা মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রাথমিক আলামত পেয়েছেন। আজ শনিবার ১০টার দিকে বনানীর থানা এলাকার ২৭ নম্বর রোডের সি-ব্লকে অবস্থিত হোটেল দ্য রেইন ট্রি পরিদর্শনে যায় তদন্তদল। পরে সাংবাদিকদের কথা বলেন দলপ্রধান মো. নজরুল ইসলাম। কী দেখে তদন্তদলের মনে হয়েছে যে, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী, ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। ওই প্রতিবেদনে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য থাকবে। জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে গত ৬ মে বনানী থানায় মামলা করেন এক ছাত্রী। মামলার আসামিরা হলেন আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদ, নাঈম আশরাফ, সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী আবুল কালাম আজাদ। মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ মার্চ রাত ৯টা থেকে পরের দিন সকাল ১০টা পর্যন্ত আসামিরা মামলার বাদী এবং তাঁর বান্ধবী ও বন্ধু শাহরিয়ারকে আটক রাখেন। অস্ত্র দেখিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করেন। বাদী ও তাঁর বান্ধবীকে জোর করে ঘরে নিয়ে যান আসামিরা। বাদীকে সাফাত আহমেদ এবং বান্ধবীকে নাঈম আশরাফ একাধিকবার ধর্ষণ করেন। এ নিয়ে সারা দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই গত ৮ মে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। কমিটিতে নজরুল ইসলাম ছাড়াও সদস্য রয়েছেন নুরুন নাহার ওসমানী, এনামুল হক চৌধুরী, মো. শরীফ উদ্দিন ও এম রবিউল ইসলাম। পরিদর্শন শেষে তদন্তদলের প্রধান বলেন, ওই ধর্ষণের ঘটনা তদন্তের জন্য মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে গঠিত কমিটি আজ হোটেল পরিদর্শন করেছে। এ সময় হোটেলের আট থেকে দশজন স্টাফের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। হোটেলের যে দুটি কক্ষে ওই ছাত্রীদের ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে, কক্ষ দুটি বাইরে থেকে তাঁরা দেখেছেন। কক্ষের দরজা বন্ধ থাকায় ভেতরে প্রবেশ করা যায়নি। ‘প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে’, যোগ করেন নজরুল ইসলাম। চাঞ্চল্যকর এ মামলার আসামি সাফাত আহমেদ ও সাদমান সাকিফকে গত বৃহস্পতিবার সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাফাতকে ছয়দিন এবং সাকিফকে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।