ভোট পুনর্গণনা কাল,চলচ্চিত্র শিল্পীদের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন দুদিন পেরুতে না পেরুতেই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেছেন সভাপতি প্রার্থী ওমর সানি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করার জন্য নির্বাচন আপিল বোর্ডের কাছে আবেদন করেন। বিষয়টি আমলে নিয়ে আপিল বোর্ড আগামীকাল মঙ্গলবার ভোট পুনরায় গণনার সিদ্ধান্ত নেয়। গত ৫ মে এফডিসিতে অনুষ্ঠিত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন হয়। এতে ২৫৯টি ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন মিশা সওদাগর, আর নিকটতম প্রার্থী ওমর সানি পান ১৫৩টি ভোট। অন্যদিকে জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ২৭৯টি ভোট পেয়ে, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অমিত হাসান পান ১৪৫টি ভোট। শনিবার সকালে ফলাফল প্রকাশের পর ওমর সানি-অমিত হাসান প্যানেল থেকে কেউ কোনো অভিযোগ না তুললেও গতকাল রোববার ওমর সানি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এবং নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবি করেন। আপিল বোর্ডের কাছে পাঠানো আবেদনপত্রে ওমর সানি বলেছেন, ‘আমি মনে করি একটি পক্ষ তাদের স্বার্থে নির্বাচন বোর্ডকে প্রভাবিত করেছে। এমতাবস্থায় এই রকম অসঙ্গতিপূর্ণ ফলাফল সম্পূর্ণ কারচুপির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে আমি এই ফলাফল বাতিল করা, নির্বাচন বাতিল করার আবেদন করছি। ওমর সানি ওই আবেদনপত্রে আরো লেখেন, ‘আমি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন ২০১৭-এর একজন সভাপতি প্রার্থী। গত ৫.৫.১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোটরদের প্রদেয় ভোট গণনা সঠিক ভাবে হয়নি। কারণ ভোট কাষ্ট হয়েছে ৫৫৮টি, এর মধ্যে ৮৯টি ভোট বাতিল বলে নির্বাচন বোর্ড প্রকাশ করেছে। তারপর মোট ফলাফল সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ, যেমন সভাপতি ৩ জনের ভোট যোগ করলে মোট ৪৬৯টি ভোট হওয়া উচিত, কিন্তু প্রকাশিত ফলাফলে পাওয়া যায় ৪৫৬টি। ওমর সানি চিঠিতে শাকিব খান প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘সমিতির সভাপতি শাকিব খান পদাধিকার বলে ভোট গণনার সময় উপস্থিত থাকতে পারেন, কিন্তু নির্বাচন কমিশন গণনার সময় জোরপূর্বক তাঁকে অফিস থেকে বের করে দেন যা কোনোভাবে কাম্য ছিল না। বিকেলের দিকে অনেক শিল্পী ভোটার বিভিন্ন বাধার মুখে এফডিসিতে প্রবেশ না করতে পেরে ভোট না দিয়েই চলে গেছেন। ওমর সানির এমন অভিযোগ ও ফলাফল বাতিলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচনের আপিল বোর্ডের সদস্য ও চলচ্চিত্র প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘আমরা ওমর সানির লিখিত অভিযোগটি গতকাল হাতে পেয়েছি। আগামীকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় আমরা বিষয়টি নিয়ে বসব। আশা করি, সব কিছু স্বচ্ছভাবে সবার সামনে তুলে ধরব। কাল ভোট পুনর্গণনা করা হবে। খোরশেদ আলম আরো বলেন, ‘আসলে সব কিছুই তো ব্যালটে আছে এবং তা এখনো সঠিক ভাবেই আছে। আমরা সব ব্যালট নিয়ে সবার সামনে বসব। তখনই আসলে সব সিদ্ধান্ত হবে। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ওমর সানি-অমিত হাসান, মিশা সওদাগর-জায়েদ খান ও ড্যানি সিডাক-ইলিয়াস কোবরা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ২১টি পদের বিপরীতে ৫৮ শিল্পী বিভিন্ন পদে প্রার্থী হন। নির্বাচনে মিশা ও জায়েদা ছাড়াও নির্বাচিত হন রিয়াজ (সহসভাপতি), নাদির খান(সহসভাপতি), আরমান (সহসাধারণ সম্পাদক), সুব্রত (সাংগঠনিক সম্পাদক), মামুনুল ইমন হিরো (আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক), জ্যাকি আলমগীর (দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক), জাকির হোসেন (সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক), কমল (কোষাধ্যক্ষ)। সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন আলীরাজ, অঞ্জনা সুলতানা, রোজিনা, মৌসুমী, পপি, পূর্ণিমা, ফেরদৌস, সাইমন, সুশান্ত, নাসরীন, জেসমিন।