এই প্রথমবার মালা দিয়ে বরণ হলো না : মিশা সওদাগর
এ বছরের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন নানা কারণে বেশ আলোচিত। এর কারণ এবারই নির্বাচনে সর্বাধিক তারকা নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন, ভক্তদের ভিড় সামলাতে এফডিসির গেটে পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, গভীর রাতে ভোটগণনা কেন্দ্রে শাকিব খানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা হয়েছে, এর দুদিনের মাথায় নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবি করেছেন পরাজিত সভাপতি প্রার্থী ওমর সানি। সব মিলিয়ে উত্তেজনাকর এই নির্বাচনের শেষ অঙ্ক এখনো বাকি, কারণ আগামীকাল মঙ্গলবার পুনরায় ভোট গণনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন সংক্রান্ত আপিল বোর্ড। এসব বিষয়ে কথা হয় সদ্য নির্বাচিত সমিতিন নতুন সভাপতি মিশা সওদাগরের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, এবারই প্রথম বিদায়ী কমিটি মালা দিয়ে নতুন কমিটিকে বরণ করল না। মিশা সওদাগর বলেন, ‘এর আগের বছরগুলোতে আমরা যে যখন নির্বাচিত হয়েছি, একে অপরকে মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছি। এবারই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল যে কেউ মালা নিয়ে শুভেচ্ছা জানাননি। আমিও এর আগে ফেল করেছি এবং আমার প্রতিদ্বন্দ্বীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। আমি আশা করেছিলাম, আমাকেও সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাবে। ভোটের পার্থক্য নিয়ে ওমর সানি যে আপত্তি তুলেছেন, সে প্রসঙ্গে মিশা বলেন, ‘আসলে আমরা ভোটের আগের রাত থেকে সবাই কাজ করছি। আবার সকাল ৭টায় সবাই এফডিসিতে এসে কাজ শুরু করি, সারাদিন নির্বাচন করে সারারাত ভোট গণনা হয়েছে। আমরা তো মেশিন নই যে কোনো ভুল হবে না। সাধারণ কোনো ভুল থাকতেই পারে। তবে সেটা খুবই সাধারণ, আমার জয় হয়েছে ১০০ ভোটের পার্থক্যে। পাঁচ-দশটি ভোটের ভুল হতে পারে, কিন্তু ১০০ ভোট গণনাতে ভুল হবে না। তবে আগামীকাল আপিল বোর্ড সবাইকে নিয়ে বসে দেখবে কোথায় কী সমস্যা ছিল। মিশা আরো বলেন, ‘যদিও আমরা সবাই ক্লান্ত ছিলাম, তবুও সবাই ভোট গণনার সময় উপস্থিত ছিলাম। আমি ছিলাম, ওমর সানির পক্ষে মৌসুমী ছিলেন, আরেক জন সভাপতি প্রার্থী ড্যানি সিডাক ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অমিত হাসান ও ইলিয়াস কোবরা ছিলেন, এ ছাড়া আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। সবাই দেখেছে, সবার সামনেই হয়েছে গণনা। আর যে কয়টা ভোট বাতিল হয়েছে, তার বেশির ভাগ আমারই ছিল। তারপরও বলব, আগামীকাল আপিল বিভাগ সবাইকে নিয়ে বসবে, সেখানে যা হয় আমি তা মাথা পেতে নেব। গত ৫ মে এফডিসিতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন হয়। এতে ২৫৯টি ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হন মিশা সওদাগর, আর নিকটতম প্রার্থী ওমর সানি পান ১৫৩টি ভোট। অন্যদিকে জায়েদ খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ২৭৯টি ভোট পেয়ে, তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অমিত হাসান পান ১৪৫টি ভোট। শনিবার সকালে ফলাফল প্রকাশের পর ওমর সানি-অমিত হাসান প্যানেল থেকে কেউ কোনো অভিযোগ না তুললেও গতকাল রোববার ওমর সানি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এবং নির্বাচনের ফলাফল বাতিলের দাবি করেন। আপিল বোর্ডের কাছে পাঠানো আবেদনপত্রে ওমর সানি বলেছেন, ‘আমি মনে করি একটি পক্ষ তাদের স্বার্থে নির্বাচন বোর্ডকে প্রভাবিত করেছে। এমতাবস্থায় এই রকম অসঙ্গতিপূর্ণ ফলাফল সম্পূর্ণ কারচুপির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে বলে আমি এই ফলাফল বাতিল করা, নির্বাচন বাতিল করার আবেদন করছি। লচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ওমর সানি-অমিত হাসান, মিশা সওদাগর-জায়েদ খান ও ড্যানি সিডাক-ইলিয়াস কোবরা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ২১টি পদের বিপরীতে ৫৮ শিল্পী বিভিন্ন পদে প্রার্থী হন। নির্বাচনে মিশা ও জায়েদা ছাড়াও নির্বাচিত হন রিয়াজ (সহসভাপতি), নাদির খান(সহসভাপতি), আরমান (সহসাধারণ সম্পাদক), সুব্রত (সাংগঠনিক সম্পাদক), মামুনুল ইমন হিরো (আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক), জ্যাকি আলমগীর (দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক), জাকির হোসেন (সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক), কমল (কোষাধ্যক্ষ)। সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন আলীরাজ, অঞ্জনা সুলতানা, রোজিনা, মৌসুমী, পপি, পূর্ণিমা, ফেরদৌস, সাইমন, সুশান্ত, নাসরীন, জেসমিন।