পাবলিক পরীক্ষায় হঠাৎ করে জিপিএ ৫ কীভাবে বেড়েছে, তা জানে না কেউ : কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক
বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক বলেছেন, দেশে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় হঠাৎ করে জিপিএ ৫ কীভাবে বেড়েছে, তা জানে না কেউ। আজ শনিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘বাংলার দর্শনের স্বরূপ ও শেকড়ের খোঁজে’ শিরোনামে তিনদিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী দিনে এই মন্তব্য করেন হাসান আজিজুল। জাবির দর্শন বিভাগে আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রথম দিনে নিজের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বর্ষীয়ান এই কথাসাহিত্যিক ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। এ সময় দেশের শিক্ষার মান নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আজকে বাঙালির প্রকৃত অবস্থা কী? অনেক বড় বড় কথা শুনতে পাই। জিপিএ ফাইভ বেড়েছে। কিন্তু জিপিএ ফাইভ কীভাবে বেড়েছে, কেন বাড়ল হঠাৎ করে, কেউ জানে না। এখন আবার শুনছি কমেছে। হঠাৎ করে আবার কেন কমল, তা-ও কেউ জানে না। নিজের ক্লাসের উদাহরণ টেনে এই কথাসাহিত্যিক বলেন, ‘জিপিএ ফাইভ বেড়েছে। ছাত্রছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছে। ছাত্রছাত্রীদের জিজ্ঞেস করলাম, তোমরা কতজন জিপিএ ফাইভ পেয়েছ? ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে গেল। তো একজনকে বললাম, আমি ৮০ ভাগ নম্বর পেয়ে জিপিএ ফাইভ পেয়েছি এটা ইংরেজিতে বলো। পায়ের তলার ধুলো কাদা হয়ে গেল ঘামে। বলতে আর পারল না। ‘তাহলে লেখাপড়া কোন দিকে যাচ্ছে? এসব ব্যাপারে কথা বলার এখন কি আর তেমন কিছু আছে? প্রবাসীদের কথা উল্লেখ করে অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক বলেন, ‘জীবিকার জন্য যারা অন্য জায়গায় গিয়েছে তাদের খবর আমরা রাখি না। আমরা রেমিট্যান্সের (বৈদেশিক মুদ্রা আয়) খবর রাখি। কত টাকা জমা হলো সে খবর রাখি। ‘তারা টাকা পাঠাচ্ছে। আমরা অহংকার করে বলছি আমাদের দেশের দারিদ্র্য দূর হচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশের দাসের সংখ্যা এত বেড়ে গেল, সে খবর আমরা রাখি না। তারা স্বদেশের দাসও না, বিদেশের দাস। সকাল সাড়ে ১০টায় দর্শন বিভাগের ১১৭ নম্বর কক্ষে কর্মশালাটি শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। অধ্যাপক কামরুল আহসানের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন দর্শন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ তারেক চৌধুরী। আগামী সোমবার শেষ হবে কর্মশালাটি। এতে বাংলার দর্শন নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ ও ভারতের শিক্ষক ও গবেষকরা।