বেইমানি করে বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দিতে পারবন না : মুখ্যমন্ত্রী মমতা
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তিনি বেইমানি করে বাংলাদেশকে তিস্তার পানি দিতে পারবেন না। আজ বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ায় এক জনসভায় মমতা এই মন্তব্য করেন। অভিন্ন নদী তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়ে কথা বলার সময় অতীতের বর্ণনা দিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘৪০টা পোর্ট (বন্দর)। আর বাংলায় কী আছে? দুটি বন্দর ছিল। কলকাতা বন্দর আর হলদিয়া বন্দর। ফারাক্কা শুকিয়ে গেছে। …ফারাক্কা যখন বাংলাদেশকে জল দিল, বলল ৭০০ কোটি টাকা দেবে, আজ থেকে ২৫ বছর আগে। ‘জল, টাকা তো দিলই না, কত গ্রাম জলের তলে তলিয়ে গেল। বাংলা শুকিয়ে গেল। তা-ও বাংলাদেশকে আমরা ভালোবাসি বলে মেনে নিয়েছিলাম। তিস্তার পানির হিস্যা নিয়ে মমতা বলেন, ‘আজকে বলছে দিতে হবে। দিতে আমিও চাই। আমি কি বাংলার লোকদেরকে মেরে দিয়ে দিব? আমি বাংলার মানুষের সঙ্গে বেইমানি করতে পারব না। যতক্ষণ থাকব, বাংলার মানুষের পাহারাদার হয়ে থাকব। ‘আমি বাংলাদেশকে পানি দিতে চাই, আমি ভালোবাসি বাংলাদেশকে। যেখানে জল আছে, সেখান থেকে দেব। যেখানে নেই, সেখান থেকে দেব কী করে? ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘আমাদের গজলডোবার ওপর অনেকের নজর আছে দেখছি। চার বছর ধরে এই গজলডোবা করেছি। তিন হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট। আর এই গজলডোবাই যদি তোমায় দিয়ে দেই, সব কাজ যদি বন্ধ হয়ে যায়, শিলিগুড়ি জল পাবে না, দার্জিলিং জল পাবে না, জলপাইগুঁড়ি জল পাবে না, খেতে পাবে না, চাষ হবে না। নজর রাখতে হবে। ‘আমি তো দেব না বলিনি। আমরা ঠিক করব, কোথায় দেব। যেটা আমার সুখ করবে, বাংলার মানুষের সুখ করবে, নিশ্চয়ই করব। ছিটমহল বিনিময় নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ছিটমহল দেইনি? বলুন উত্তরবঙ্গের মানুষ। ছিটমহলে বাংলাদেশের সাত হাজার একর জমি ছিল। আর বেঙ্গলের (পশ্চিমবঙ্গ) ১০ হাজার একর জমি ছিল। কিন্তু বাংলাদেশকে ভালোবাসি বলে পেয়েছি আমরা ৭, দিয়েছি আমরা ১০। ‘এটা মাথায় রাখবেন, ছিটমহল, ল্যান্ড অ্যাগ্রিমেন্ট (সীমান্ত চুক্তি) ৬৬ বছর ধরে পড়েছিল, কেউ করেনি। কিন্তু আমরা করে দিয়েছি। বাংলাকে বঞ্চনা করবেন না। এটা মাথায় রাখবেন।’