অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে চলমান মৌসুম শেষ করবে ভারত। আগামীকাল থেকে অসিদের বিপক্ষে শুরু হওয়া চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ জিতে মৌসুম শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে টিম ইন্ডিয়া। পক্ষান্তরে ভারতের মাটিতে ১৩ বছর টেস্ট সিরিজ জিততে না পারার বন্ধ্যাত্ব ঘোচানোর মিশনে নামবে অস্ট্রেলিয়া।পুনেতে আগামীকাল সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায়। ২০১৫ সালের আগস্ট থেকে টেস্ট ক্রিকেটে দুরন্ত হয়ে উঠেছে ভারত। গেল ১৮ মাসে দেশের মাটিতে চারটি ও বিদেশের মাটিতে দুইটিসহ মোট ছয়টি টেস্ট সিরিজ খেলে সব কটিতেই জিতে নিয়েছে বিরাট কোহলির দল। শ্রীলংকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয় করে ভারত। এ সময়ে টানা ১৯ টেস্ট অপরাজিত থাকার রেকর্ডও গড়ে টিম ইন্ডিয়া। এমন নৈপুণ্যের পুরস্কার হিসেবে আইসিসি টেস্ট র্যাংকিং-এর শীর্ষস্থান দখল করে কোহলি-অশ্বিনরা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের আগে গেল ১৮ মাসে দেশের মাটিতে ১৩টি টেস্ট খেলেছে ভারত। এরমধ্যে ১১টিতে জয় ও ২টি ম্যাচে ড্র করে টিম ইন্ডিয়া। তাই দেশের মাটিতে এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্স অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজেও অব্যাহত রাখতে চান ভারত দলপতি বিরাট কোহলি, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজটি আমাদের কাছে অনেক বড়। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটিও আমাদের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্র্ণ ছিল। প্রত্যাশা মত ৪-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছি। এবার অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও আমরা আমাদের খেলাটাই খেলে এবং জয়ের ধারা অব্যাহত অব্যাহত রাখতে চাই।’ টানা চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজেই ডাবল-সেঞ্চুরি হাকিয়েছেন কোহলি। তাই ভারতের ব্যাটিং লাইনের অন্যতম ভরসার নাম কোহলি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের শেষ ম্যাচে ট্রিপল সেঞ্চুরির পরও বাংলাদেশের বিপক্ষে একমাত্র ম্যাচে সুযোগ পাননি করুন নায়ার। যা ভারতের ব্যাটিং গভীরতার একটি প্রকুষ্ঠ উদাহরণ।ব্যাটিং লাইন-আপে কোহলি যেখানে ভরসার প্রতীক, বোলিং-এ ভারতের ভরসার প্রতীক রবীচন্দ্রন অশ্বিন। আইসিসি বোলিং র্যাংকিং-এর শীর্ষে রয়েছেন অশ্বিন। বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্টে ২৫০ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। মাত্র ৪৫ টেস্টে এই মাইলফলক স্পর্শ করে নতুন রেকর্ডের জন্ম দেন অশ্বিন। অশ্বিনের পার্টনার হিসেবে স্পিন বিভাগে রয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন-আপ ধসিয়ে দেয়ার সার্মথ্য আছে জাদেজার। গেল ছয়টি সিরিজে সেই প্রমাণও দিয়েছেন তিনি। পক্ষান্তরে ভারতের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত হয়েই এসেছে অস্ট্রেলিয়া। দুবাইয়ে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করেছে তারা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এশিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার পারফরমেন্স নিয়ে বেশ শঙ্কিত অসি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। কারণ এখন পর্যন্ত টানা নয় টেস্ট হেরেছে অসিরা।ভারত সফরকে কঠিন আখ্যায়িত করে স্মিথ বলেন, আমরা জানি এটি কঠিন সফর। ভারত অনেক ভালো দল। বিশেষভাবে তাদের কন্ডিশনে। আমরা ভালো প্রস্তুতি নিয়েই এসেছি।
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের বেশ আগেই ইংল্যান্ডের অভিজ্ঞ স্পিনার মন্টি পানেসার ও ভারতের সাবেক বাঁ-হাতি স্পিন অলরাউন্ডার শ্রীধরন শ্রীরামকে নিয়োগ দিয়েছিলো অস্ট্রেলিয়া। ভারতের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার স্পিনারদের ভালো করার জন্যই এমন উদ্যোগ নেয় অসিরা। পেস আক্রমণে অস্ট্রেলিয়া নির্ভর করবে মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজেলউডের উপর। ভারতের বিপক্ষে চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই নতুন ভেন্যুতে খেলবে অস্ট্রেলিয়া।পুনে, রাঁচি ও ধর্মশালাতে প্রথমবারের মত টেস্ট খেলবে অসিরা। অন্য টেস্টের ভেন্যু ব্যাঙ্গালুরু। যেখানে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার।
ভারতীয় দল (সম্ভাব্য): বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রবীচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, ভুবেনশ্বর কুমার, অভিনব মুকুন্দ, করুন নায়ার, হার্ডিক পান্ডে, চেতেশ্বর পূজারা, আজিঙ্কা রাহানে, লোকেশ রাহুল, ঋদ্ধিমান সাহা (উইকেটরক্ষক), ইশান্ত শর্মা, মুরালি বিজয়, জয়ন্ত যাদব, উমেশ যাদব ও কুলদীপ যাদব।
অস্ট্রেলিয়ার দল (সম্ভাব্য): স্টিভেন স্মিথ (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, ম্যাথু ওয়েডে (উইকেটরক্ষক), অ্যাস্টন আগার, জ্যাকসন বার্ড, পিটার হ্যান্ডসকম্ব, জশ হ্যাজেলউড, উসমান খাজা, নাথান লিঁও, মিচেল মার্শ, শন মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, স্টিভ ও’কেফি, ম্যাট রেনশ, মিচেল স্টার্ক ও মিচেল সুইপসন।
Share!