টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ১৬ বছর পর ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উপলক্ষটা বিশেষই। তবে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের কাছে এটি মোটেও ‘ঐতিহাসিক’ কিছু নয়। ভারত সফরে ভালো করতে চান। পারফরম্যান্সটা এমন জায়গায় নিতে চান, যেন ভারত বারবার টেস্ট খেলতে আমন্ত্রণ জানায় বাংলাদেশকে।কাল সকালেই হায়দরাবাদের উদ্দেশে দেশ ছাড়বে দল। বিশ্বের সেরা টেস্ট দলের বিপক্ষে হারাবার কিছু নেই বাংলাদেশের। মুশফিক সেটি মানেন। ভারতের মাটিতে খেলা বলেই প্রত্যাশাটা ‘লড়াই করব’-র মধ্যেই সীমিত রাখতে চান বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক, ‘ভারতের মাটিতে ভারত খুব ভালো শক্তিশালী দল। আমরা স্কোয়াড দেখেছি। শক্তিশালী স্কোয়াড। তাদের বিপক্ষে আমরা দুই তিন দিন নয়, বরং পুরো পাঁচ দিন ভালো খেলতে চাই।’নিউজিল্যান্ড সফরে দুটি টেস্টই বিরাট শিক্ষা বাংলাদেশের জন্য। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সগুলোকে দলগত পারফরম্যান্সে পরিণত করতে না পারার ব্যর্থতাই যে সবকিছু শেষ করে দিতে পারে বাংলাদেশ সেটি বুঝেছে বেশ ভালোভাবেই। ভারত সফরে তাই ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সকে দলগত পারফরম্যান্সে পরিণত করাই লক্ষ্য মুশফিকের, ‘ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দিয়ে নয়, দরকার হলো দলগত খেলা। যারা এত দিন ভালো খেলেছে, আশা করি তারা সেটা ধরে রাখবে। আর যারা ভালো খেলতে পারেনি, তারা এখন নিজেদের মেলে ধরবে। দলীয় প্রচেষ্টাটা দরকার। তাহলে ভালো ফল হবে।’ নিজের চোট প্রায় সেরে উঠেছে বলেই জানিয়েছেন মুশফিক। ৯ ফেব্রুয়ারি টেস্টের আগেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা তাঁর, ‘আল্লাহর রহমতে আমার ইনজুরি অনেকটা কমে এসেছে। এখনো টেস্টে নয় দিন বাকি আছে। ওখানে গিয়ে একটা অনুশীলন ম্যাচ আছে। আশা করছি, তার আগেই আমি পুরো ফিট হয়ে যাবে। এ ছাড়া একজন কিপারের আঙুলের ব্যথা থাকে। এটা ম্যানেজ করে খেলতে হয়। অনুশীলন ম্যাচটা খেলে ম্যাচ ফিটনেস ফিরে পেতে চাই।’মোস্তাফিজকে দীর্ঘ সময়ের জন্যই পেতে চান মুশফিক। সে কারণেই ভারত সফরে তাঁকে না পাওয়ায় আফসোস নেই বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়কের। তাঁর প্রার্থনা, দলের আক্রমণের অন্যতম প্রধান অস্ত্র যেন দীর্ঘমেয়াদি চোটে না পড়েন, ‘মোস্তাফিজকে সব সময় দলে চাই। সে যাতে তিন ধরনের ক্রিকেটেই খেলতে পারে, সেটাই আমরা চাই। সামনে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ আছে। এরপর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আছে, সেখানে তাকে আমাদের দরকার। এ ছাড়া ইনজুরি থেকে ফিরেই একজন বোলার সরাসরি টানা পাঁচ দিন খেলতে পারে না। এটা কঠিন। টেস্ট খেলতে গিয়ে সে যদি দীর্ঘ মেয়াদি ইনজুরিতে পড়ে, সেটা খারাপ হবে।’
ভারত ১৬ বছর টেস্ট খেলতে তাদের দেশে ডাকেনি। এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে চান না মুশফিক। তাঁর মতে, বরং পাঁচ বছর আগে ভারতে না গিয়ে এখন যাওয়াটা দলের জন্যই ভালো হয়েছে। ভারতের মাটিতে ভালো খেলার সম্ভাবনাটা উজ্জ্বল হয়েছে, ‘আমার কাছে এটা ঐতিহাসিক ধরনের কিছু মনে হয় না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেললে বেশি চাপ থাকে। কারণ তাদের কাছে হারলে অনেক ব্যাপার থাকে। ওখানে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। পাঁচ বছর আগের চেয়ে এখন যাওয়া মানে আমাদের ভালো কিছু করার আছে। ভারতের মাটিতে আমরা কেমন খেলি, সেটা প্রমাণ করার আছে। এটা আর দশটা ম্যাচের মতোই একটা টেস্ট। এমন পারফর্ম করতে চাই, যাতে ভারত যেন আমাদের বারবার আমন্ত্রণ জানায়।’
টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ১৬ বছর পর ভারতের মাটিতে প্রথম টেস্ট
Share!