Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

মহেন্দ্র সিং ধোনির অধিনায়কত্ব থেকে বিদায়

মহেন্দ্র সিং ধোনি স্বেচ্ছায় সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেননি? তাঁর ওপর ছিল ভারতীয় নির্বাচকদের চাপ! ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সূত্রের বরাতে এমনই একটি খবর দিয়েছে ।গত সপ্তাহে ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়েছিল খবরটা—ধোনি ভারতের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কোনো পূর্বাভাস ছাড়াই ধোনির এমন সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছিলেন অনেকে। অনেকে তাঁর এই সিদ্ধান্তে তাঁর সময়জ্ঞানের তারিফ করেছিলেন। কিন্তু হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার পেছনে কাজ করেছে এম এস কে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় নির্বাচকদের চাপ। তাঁরাই নাকি ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে সফল অধিনায়ককে ২০১৯ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের কথা বলে অধিনায়কত্ব ছাড়তে বলেছিলেন।দুই বছর পরের বিশ্বকাপে ধোনির জায়গা নিশ্চিত নয়। ফলে নতুন অধিনায়ককে যথেষ্ট সময় দিতে হবে দল গোছাতে। ধোনি নিজেও এ–ই ভেবে সরে দাঁড়িয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছিল। ধোনির এই চাওয়া একেবারে মন থেকে আসেনি। চাপে পড়েই এসেছে।পত্রিকাটি লিখেছে, ভারতীয় নির্বাচকেরা দুই দফায় ধোনির সঙ্গে কথা বলে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিতে বলেন। পুরো প্রক্রিয়াটির শুরু গত সেপ্টেম্বরে। নির্বাচকের দায়িত্ব পেয়েই এম এস কে প্রসাদ বৈঠকে বসেন তাঁর চার সতীর্থ—শরণদীপ সিং, গগন খোড়া, দেবাং গান্ধী ও যতীন পারাঞ্জাপেদের নিয়ে। সেখানেই বিশদ আলোচনা হয় ধোনির ব্যাপারে। তাঁরা একটি লক্ষ্যও নির্ধারণ করেন ২০১৯ বিশ্বকাপকে ঘিরে। পুরো বিষয়টিই ব্যাখ্যা করা হয় ধোনির কাছে। মনে করিয়ে দেওয়া হয়, ২০১৯ বিশ্বকাপের সময় ধোনির বয়স ৩৯-এর দোরগোড়ায় থাকবে। তাঁকে বোঝানো হয়, বিরাট কোহলির কাছে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার এটিই সেরা সময়।ধোনি তখনই তাঁদের কিছু বলেননি। তবে কিছুদিন আগে এম এস কে প্রসাদ নাগপুরে ঝাড়খন্ড ও গুজরাটের মধ্যকার রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনাল ম্যাচে আবারও ধোনির সঙ্গে দেখা করে একই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এর পরপরই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ধোনি। বোর্ডকে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানান। এরপর বোর্ডের তরফ থেকে আসে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।তা ছাড়া টেস্টে কোহলি ভারততে ছয় সিরিজ জিতিয়েছেন, ওয়ানডেতে ধোনির নেতৃত্বে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে অতটা মসৃণ নয় ভারতের যাত্রা। এটাই কোহলির হাতে নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়ার সঠিক সময়—এমন কথা ভারতের ক্রিকেট মহলেও উঠেছে।অধিনায়ক হিসেবে ভারতকে ২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানোর পর ২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও হাত রাখেন ধোনি। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রানার্সআপ হয় ভারত। ২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও এ বছরে নিজেদের দেশে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে ওঠে ভারত। সাম্প্রতিক কালে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতের পারফরম্যান্সকে নির্বাচকেরা খুব সদয় দৃষ্টিতে অবশ্য দেখেননি। ২০১৫ সালে বাংলাদেশের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হারা দিয়ে শুরু। সে বছরই ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ হার। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪-১ ব্যবধানে হেরে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে কোনোমতে জয়—টেস্টের মতো খুব দাপুটে ছিল না ভারতের সীমিত ওভারের পারফরম্যান্স। ধোনির নেতৃত্বে গত বছরে ওয়ানডেতে ৭ জয়ের বিপরীতে ৬ হারও মাথায় রেখেছিলেন তাঁরা।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top