গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় তিনটি মন্দিরের অন্তত ২০টি মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে।
বুধবার রাতে উপজেলার জামাই বাজার ডুমুরিয়া সার্বজনীন দুর্গা মন্দির, হরি মন্দির ও রাধাগোবিন্দ মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ সবুর ও সোয়েব নামে দুই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। বৃহস্পতিবার সকালে মন্দিরের পূজারী কমলা রানী বালা মন্দিরে পূজা করতে গিয়ে এ অবস্থা দেখতে পেয়ে গ্রামবাসীকে খবর দেয়। পর এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে বিক্ষুব্ধ হিন্দু জনসাধারণ বিক্ষোভ মিছিল করেছে। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জে জেলা প্রশাসক মো. মোখলেসুর রহমান সরকারসহ পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন ও এ ঘটনার খোঁজ খবর নেন।মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিরাপদ বসু বলেন, ‘বুধবার রাতে দুর্বৃত্তরা গ্রিল ভেঙ্গে দূর্গা মন্দির, হরি মন্দির ও রাধা গোবিন্দ মন্দিরের ভিতরে প্রবেশ করে মূর্তি ভাঙচুর করে। একটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগও করে তারা। আগুনে তেমন কোনো ক্ষয়-ক্ষতি হয়নি। দুর্বৃত্তরা দুর্গা মন্দিরের সব মূর্তি, হরি মন্দিরের হরি মূর্তি ও রাধা গোবিন্দ মন্দিরের মূর্তিসহ অন্তত ২০টি মূর্তি ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনায় আমরা টুঙ্গিপাড়া থানায় মামলা করব।’ডুমরিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান শুখময় বাইন অভিযোগ করে বলেন, ‘জামাই বাজার সংলগ্ন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ড সম্প্রতি একটি লক গেট নির্মাণ করে। গেট নির্মাণ করার সময় সরকারি জায়গায় শ্রমিকরা একটি ঘর তুলে নামাজ আদায় করতেন। ওই ঘরের জায় নামাজসহ অন্যান্য মালামাল কে বা কারা ফেলে দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় বিরোধ সৃষ্টি হয়। এছাড়া গেট এলাকার সরকারি জায়গায় উত্তর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের এজাজ শেখ ও সিরাজ শেখ জোর করে দোকান ঘর তুলতে গেলে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবকরা বেশ কয়েক দফা বাধা দেয়। বুধবার সন্ধ্যায় এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি মিটিয়ে ফেলে। রাতে এজাজ শেখকে ওই এলাকায় ৮/১০ জনকে নিয়ে মিটিং করতে দেখা গেছে। সকালে আমরা মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর দেখতে পাই ‘এ ব্যাপারে এজাজ শেখের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহামুদুল হক বলেন, ‘দোকান ঘর তোলার বিরোধকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আমরা এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবদের জন্য দুইজনকে আটক করেছি। থানায় মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের করার পরই মামলা দায়ের করা হবে। জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অমরা দ্রুতই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে পারবো।
Share!