মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নির্যাতনের ক্ষেত্রে গণহত্যা এবং ধর্ষণের মতো কোন ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি দেশটির সরকারের গঠিত তদন্ত কমিশনের।মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর সরকারি বাহিনীর নির্যাতনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্তবর্তী রির্পোটে বলা হয়েছে, ছড়িয়ে পড়া ধর্ষণ অভিযোগের পক্ষেও কোন প্রমাণ মেলেনি।তবে নিরাপত্তা রক্ষা বাহিনীর হাতে মানুষ হত্যা সম্পর্কে প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি।মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অক্টোবর মাস থেকে সন্ত্রাসী নির্মূল অভিযানের নামে শুরু হয় রোহিঙ্গা নির্যাতন। রোহিঙ্গা নির্যাতনের ক্ষেত্রে শান্তিতে নোবেল জয়ী মিয়ানমারের নেত্রী অং সাং সু চি-র নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে। এমনকী সু চি-র নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিও উঠে।সারা বিশে^র সমালোচনার মুখে অনেকটা বাধ্য হয়েই রোহিঙ্গা নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেন সু চি। মিয়ানমারের সাবেক জেনারেল মিন্ট সুই কে প্রধান করে গঠিত কমিশন জানুয়ারির মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে।কিন্তু অন্তবর্তী প্রতিবেদনে গণহত্যার বিষয় নাকচ করে বলা হয়েছে, রাখাইনে এখনো প্রচুর মুসলিম বাস করছে এবং তাদের উপসনালয়গুলো ধ্বংস হয়নি। তাহলে তো এটি প্রমাণ হয় যে, সেখানে গণহত্যা হয়নি। এমনকি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা ধর্ষণের যে অভিযোগ করা হয়েছে, এর স্বপক্ষেও কোন প্রমাণ মেলেনি। যদিও এটি ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে।রোহিঙ্গাদের ঘর-বাড়িতে অগ্নি সংযোগ এবং নির্বিচারে গ্রেপ্তারের অভিযোগের তদন্ত চলছে।আশ্চর্যজনকভাবে, আটক অবস্থায় মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নির্যাতনে বন্দী মৃত্যুর বিষয়ে কমিশনের কোন মন্তব্যই নেই। অর্থাৎ বিষয়টি তাদের আমলেই নেই বলে জানান বিবিসি-র মিয়ানমার প্রতিনিধি জোনাথ ফিসার।তিন মাস ধরে চলা নির্যাতন এবং বিশ^জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার পর অবশেষে মৃদু পদক্ষেপ নেয় মিয়ানমার সরকার। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েকশ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে কিন্তু এখনো আগ্নোয়াস্ত্র নিয়ে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়া মিয়ানমার পুলিশের চৌকিতে হামলা করে যেসব অস্ত্র লুট করা হয়েছিল, সেগুলো পুরোপুরি উদ্ধার করা হয়নি।এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরা একটি রোহিঙ্গা নির্যাতনের ভিডিও গেল সপ্তাহে প্রথমবারের মতো আমলে নেয় মিয়ানমার সরকার। ওই ভিডিও দেখে চারজন পুলিশকেও গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা যায়।এদিকে রাখাইন রাজ্যে সাংবাদিক এবং তদন্তকারীদের প্রবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে। এই কারণে সেখানকার স্পষ্ট পরিস্থিতি তুলে ধরা যাচ্ছে না। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমকে মিয়ানমারের বৌদ্ধ সম্প্রদায় জোর করে প্রতিবেশী বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা ধর্ষণ ও নির্যাতন অভিযোগের পক্ষেও কোন প্রমাণ মেলেনি
Share!