ছাতক (সুনামগঞ্জ): ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কের লক্ষ্মীবাউর এলাকায় সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে পাকা সড়কটি। বালুর বস্তা দিয়ে সড়কটি টিকিয়ে রাখার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চলছে সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে তলিয়ে যাচ্ছে সড়কও জনপথ বিভাগের ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়ক। অব্যাহত ভাঙনের কবলে পড়ে ইতোমধ্যেই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে একাধিক হাট-বাজার, গ্রাম, মসজিদ, শিক্ষা প্রতিষ্টানসহ অসংখ্য বাড়ী-ঘর। ফলে যে কোন সময় ছাতক উপজেলার সাথে দোয়ারাবাজারের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার আশংকা রয়েছে। জানা যায়, সুরমা নদীর উত্তর পার ঘেঁষে চলে গেছে গোবিন্দগঞ্জ-ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কটি। এরমধ্যে ছাতক থেকে দোয়ারাবাজার অংশের লক্ষ্মীবাউর এলাকায় প্রায় দেড় কি.মি. এলাকায় সুরমা নদীর ভয়াবহ ভাঙন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ছাতকের নোয়ারাই ইউপি’র লক্ষ্মীবাউর বাজারের একটি গলিসহ বিভিন্ন স্থাপনা তলিয়ে গেছে সুরমা নদীতে। এভাবে দোয়ারাবাজার সদর ইউপি’র কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে নদীতে। নদীভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পদক্ষেপ নেয়ার দাবী জানিয়েও কোন সুফল পাচ্ছে না এলাকাবাসী। দোয়ারাবাজারবাসী ছাতক থেকেই দোকানের মালামাল ক্রয়-বিক্রয়সহ সারা দেশের সাথে যোগাযোগ করে থাকেন। একসময়ে ছাতক থেকে দোয়ারাবাজার যাওয়া-আসার একমাত্র মাধ্যমই ছিল লঞ্চ ও পরবর্তীতে ইঞ্জিন এবং হস্তচালিত নৌকা দিয়ে। হেমন্তে পায়ে হেঁটেও আসা-যাওয়া করতো এ অঞ্চলের মানুষ। সময়ের বিবর্তনের সাথে-সাথেই ছাতক-দেয়ারার যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবিত উন্নয়ন সাধিত হয়। প্রথম দিকে কাঁচা সড়ক দিয়েই ছাতক-দোয়ারার মানুষ যাতায়াত করেছেন। ১৯৯১-৯২ইং অর্থবছরে সড়কটি পাকাকরণের কাজ শুরু করা হয়। ছাতকের নোয়ারাই থেকে দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরন সমাপ্ত হলে ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলার মানুষের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক নবদিগন্তের সূচনা হয়। লঞ্চ বা নৌকা যোগে ছাতক থেকে দোয়ারায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টার স্থলে এখন সড়ক পথে মাত্র ৩০/৩৫ মিনিটেই পৌঁছা সম্ভব হচ্ছে। এক সময়ের পায়ে হাঁটা থেকে সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় মানুষের চাহিদার আরো বেড়ে যায়। ফলে ব্যবসা-বানিজ্যে গতি ফিরে আসে। প্রথম দফায় পাকা সড়কটি নদীগর্ভে বিলীন হলে সড়ক প্রশস্তকরনসহ দ্বিতীয় দফা সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে ছাতক-দোয়ারার যোগাযোগ ব্যবস্থা অটুট রাখা হয়। ভাঙ্গনে লক্ষ্মীবাউরবাজার জামে মসজিদ ও বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান বহু আগেই ভাঙনের মুখে পড়ে বিলীন হয়ে গেছে। সড়কের পাশাপাশি লক্ষ্মীবাউর বাজারটি আবারো নদী ভাঙ্গনের হুমকির মুখে রয়েছে। লক্ষ্মীবাউর গ্রামের বাসিন্দা ও ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন, মতিন মিয়া, সফিক মিয়া ও আব্দুল বারী জানান, সুরমার ভাঙনে ফসলী জমি, দোকান-পাট হারিয়ে অনেকেই এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ছাতক সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সজীব আহমদ জানান, বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙনের সচিত্র প্রতিবেদন ও সুপারিশ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ১২ ফুট এ সড়কটি ১৮ফুট প্রসস্ত করার টেন্ডার আহবান করা হয়েছে।
ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়কে ৪টি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজের (আরসিসি) কাজও ইতিমধ্যেই সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান।
সুরমা নদীর ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে ছাতক-দোয়ারাবাজার সড়ক
Share!