প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের আসন্ন কাউন্সিলের লক্ষ্য হবে দল পুনর্গঠন করে ক্ষমতার ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং এর মাধ্যমে সরকারের চলমান উন্নয়ন কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে ২০২১ সালের মধ্যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা।আওয়ামী লীগের আসন্ন ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল উপলক্ষে বুধবার বিকালে গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভার সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন,‘প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশের দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এ উন্নয়নের সফলতা গ্রামীণ জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছে। আমাদের উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হবে এবং দলের প্রতিটি নেতা-কর্মীকে বিষয়টি মনে রাখতে হবে।’তিনি বলেন, ‘ইতোপূর্বে কাউন্সিলের ঘোষণাপত্রের প্রতিশ্রুতি অনেকগুলোই আমরা বাস্তবায়ন করেছি। দেশের উন্নয়ন কাজ আরও ভালোভাবে এবং কিভাবে মানুষের আর্থ-সামজিক উন্নয়ন করা যায়, তারই প্রতিফলন ঘটবে এবারের ঘোষণাপত্রে। এবার আরও দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’দলের গঠনতন্ত্রে সংশোধনী আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং যুগের প্রয়োজনে দলের গঠনতন্ত্রে কিছু সংশোধনী আনা হচ্ছে। গঠনতন্ত্রে কিছু কিছু সংশোধনী আনার মাধ্যমে পরিবর্তিত গঠনতন্ত্রে তৃণমূল থেকে কিভাবে সংগঠন গড়ে উঠবে, তার কিছু রূপরেখা এতে থাকবে। আমরা গঠনতন্ত্র প্রণয়ন উপ-কমিটি এবং ঘোষণাপত্র প্রণয়ন উপ-কমিটি করে দিয়েছিলাম, এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।’আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবরের কাউন্সিলকে ঘিরে দলের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ- উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের মধ্যে আওয়ামী লীগকে নিয়ে এই আস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে, তারাই (আওয়ামী লীগ) আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে পূরণ করতে পারে।’প্রধানমন্ত্রী এ সময় দারিদ্র্য দূরীকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্নখাতে তাঁর সরকারের সাফল্য তুলে ধরেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমগ্র বিশ্ব আজ একবাক্যে স্বীকৃতি দিয়েছে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য আওয়ামী লীগ সরকারের বাস্তবধর্মী কর্মসূচি এবং নীতির ফলেই অর্জিত হয়েছে। তাই বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করে গড়ে তোলার বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করার দায়িত্বও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপরই বর্তায়।’আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিষয়টি মাথায় রেখেই জনগণের জন্য রাজনীতি করতে হবে এবং জনগণের সেবায় আত্মনিবেদনের জন্য তাদের নতুন করে শপথ নিতে হবে।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের পর বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বলবৎ ছিল। মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলেছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারটুকুও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। জনগণ যেমন শোষণ বঞ্চনার স্বীকার হয়েছে, তেমনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নেমে এসেছিল জুলুম-নির্যাতন। দেশের জনগণ চরম ত্যাগ-তীতিক্ষার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই দেশে আবার গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে সন্দেহভাজন জঙ্গি নিহতের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব ‘যে কোনও মূল্যে’ রক্ষা করা হবে।’তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘অনেক মানুষের জীবন বাঁচাতে’ সন্ত্রাসীদের আঘাত দেওয়াতে অসুবিধা কোথায়?’জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সত্যতা নিয়ে বিএনপি নেতারা প্রশ্ন তোলায় একে সন্ত্রাসীদের জন্য তাদের ‘হাহাকার’ বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।এরমধ্য দিয়ে অপরাধীদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে বলে বিএনপি নেতাদের সতর্ক করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধীদের প্রশ্রয় দেওয়া আর অপরাধ করা একই কথা।’এ সময় প্রধানমন্ত্রী দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, ‘কোনও রকম জঙ্গিবাদ এ বাংলার মাটিতে সহ্য করা হবে না। আর যারা এর আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা তাদেরও বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে। বাংলা ভাইও তাদের সৃষ্টি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া যেহেতু আমাদের দায়িত্ব, সেহেতু যে কোনও মূল্যে আমরা দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করব। আমাদের কথা স্পষ্ট- ‘জিরো টলারেন্স টু টেরোরিজম। আর যারা টেররিজমের পক্ষে অবস্থান নেবে তাদের বিরুদ্ধেও আমরা ব্যবস্থা নেবো
Share!