ম্যানচেস্টার সিটিকে সামনে পেলে লিওনেল মেসি যেন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন আরও। পেপ গার্দিওলা দলটির কোচ হয়ে এবার এসেছিলেন বলে সম্ভবত ভালো করার আরও তাড়না ছিল তার মধ্যে। দুইয়ের যোগ ফল-ইংলিশ ক্লাবটি ভাসলো গোল বন্যায়। চ্যাম্পিয়নস লিগের এবারের সাক্ষাতে যে হ্যাটট্রিকও পূরণ করলেন আর্জেন্টাইন খুদে জাদুকর, তাতে ন্যু ক্যাম্পে আক্ষরিক অর্থেই বিধ্বস্ত হলো ম্যানসিটি। বার্সেলোনার জয়টা যে মাত্র ৪-০ এই ম্যাচের আগে ঘুরে ফিরে এসেছে মেসি বনাম গার্দিওলার লড়াইয়ের কথা। একজনের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার পথে অন্য জন যেমন রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, তেমনি আরেক জনের বিশ্বসেরা কোচ হওয়ার পথটা তৈরি হয়েছে অন্য জনের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে। সাবেক গুরু-শীষ্যের লড়াইয়ে মেসিকে একবারও সামলাতে পারেননি গার্দিওলা। পারলেন না এবারের সাক্ষাতেও। বরং অতীতের চেয়ে আরও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে হাজির হলেন বার্সেলোনা তারকা। ১৭ মিনিটে প্রথমবার জাল খুঁজে পাওয়া মেসি ৬১ ও ৬৯ মিনিটে আরও দুই গোল করে পূরণ করেন হ্যাটট্রিক। আর শেষ বাঁশি বাজার আগে ম্যানসিটির কফিনে শেষ পেরেকটি মারেন নেইমার।তার আগে কত ঘটনারই যে জন্ম হয়েছে ন্যু ক্যাম্পে। বলা ভালো কি হয়নি! চোট পেয়ে দশম মিনিটে মাঠ ছাড়লেন জোর্দি আলবা। ৩৯ মিনিটে জেরার্দ পিকেও একই কারণে বাধ্য হলেন মাঠ ছাড়তে। স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের জায়গায় খেলতে নামা জেরিমি ম্যাথিউ আবার এক মিনিটের ব্যবধানে দুইবার হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ৭৩ মিনিটে। বার্সেলোনা দশ জনের দলে পরিণত হওয়ার আগেই অবশ্য ৫৩ মিনিট থেকে একজন খেলোয়াড় কম নিয়ে খেলতে হয়েছে ম্যানসিটিকে। ইংলিশ ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর প্রথমবার ন্যু ক্যাম্পে ফেরা গোলরক্ষক ক্লাউদিও ব্রাভো বক্সের বাইরে হাত দিয়ে বল ঠেকাতে গিয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখে ছাড়েন মাঠ। বাকি ছিল শুধু পেনাল্টি, সেটাও বার্সেলোনা পেয়ে যায় ৮৭ মিনিটে। এমন উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে পেনাল্টি মিস না হলে হয়তো জমতো না, তাই নেইমারের স্পট কিকের সহজ সুযোগ নষ্টে সেই চক্রটাও হয় পূর্ণ।উত্তেজনা-রোমাঞ্চের ডালি সাজানো ম্যাচে বার্সা গোলরক্ষক মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেনের দুর্দান্ত সব সেভের কথা না বললে অন্যায় করা হবে খুব। অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল ঠেকিয়েছেন জার্মান গোলরক্ষক। তার এমন পারফরম্যান্স কিংবা এত সব ঘটনা ছাপিয়ে ম্যাচ শেষে উচ্চারিত হচ্ছে একটাই নাম-লিওনেল মেসি।
Share!