ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি একশজন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৯৮ জনই ফেল করেছে। পাসের হার মাত্র দুই দশমিক ৪৭ শতাংশ।চলতি বছর দেশের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বাজে ফলাফল নিয়ে কথা হচ্ছে শিক্ষাবিদদের মধ্যে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ‘খ’ ইউনিটে ৯১ শতাংশ এবং বাণিজ্য অনুষদের ‘গ’ ইউনিটে ৯৪.৪৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছিল। এবার ফেইলে রেকর্ড গড়লো ‘চ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার্থীরা।এই অনুষদে ভর্তির জন্য আসন আছে ১৩৫টি। আর চূড়ান্তভাবে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছেন ২০৮ জন। বুধবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ভর্তি অফিস কক্ষে উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফল প্রকাশ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চারুকলা অনুষদের ডিন ও ‘চ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়কারী অধ্যাপক নিসার হোসেন, অধ্যাপক হারুনুর রশীদ প্রমুখ।এসএসসি ও এইচএসসিতে ক্রমাগত শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় খেই হারিয়ে ফেলা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন উঠছে। পাসের হার বাড়লেও শিক্ষার মানের অবনতি হচ্ছে বলে সমালোচনা আছে শিক্ষাবিদদের মধ্যে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও সম্প্রতি বলেছেন, শিক্ষার মানের দিকে সরকার নজর দিচ্ছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন সম্প্রতি এক আলোচনায় এত বেশি শিক্ষার্থীর ফেল করার বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই না পড়ে গাইড বই অনুসরণ করায় এই বাজে ফলাফল হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশ্ন করি টেক্সট বই থেকে। কিন্তু তারা অনুসরণ করে গাইড বই। গাইড বই অনুসরণ করলে অনেক বেশি পড়তে হয়। কিন্তু টেক্সট বই অনুসরণ করলে কম পড়েও ভালো ফলাফল করা যায়।’গত শনিবার ‘চ’ ইউনিটের সাধারণ জ্ঞান এবং ১ অক্টোবর অংকন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয় আট হাজার ৪২১ জন। ফেল করে আট হাজার ২১৩ জন।গত শিক্ষাবর্ষের ফেল করা শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজার ৪৮৬ জন। ওই বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল পাঁচ হাজার ৬৩৬ জন। অর্থাৎ পাস করে ১৪৯ জন। শতকরা হিসাবে এই হার ছিল ২.৬৪ শতাংশ। ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষে ১৩৫ আসনের বিপরীতে সাত হাজার ২৯২ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেন ২২৬ জন। সেবার পাসের হার ছিল ৩.১০ শতাংশ।ফলাফল জানতেবিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে উচ্চ মাধ্যমিক পাসের রোল, সন, বোর্ডের নাম এবং মাধ্যমিক পরীক্ষার রোল নম্বর দিয়ে লগ ইন করে ফলাফল জানা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট- admission.eis.du.ac.bdমোবাইল ফোন থেকে পরীক্ষার ফলাফল জানতে হলে যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে ফোনের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে DU <স্পেস>CHA <স্পেস> ভর্তি পরীক্ষার রোল টাইপ করে ১৬৩২১ নম্বরে সেন্ড করতে হবে। ফিরতি এসএমএস এ ফলাফল জানা যাবে।ভর্তি প্রক্রিয়া২৩ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ওয়েবসাইটে বিস্তারিত এবং বিষয় পছন্দক্রম ফরম পূরণ করার জন্য কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ভর্তিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিভিন্ন কোটায় আবেদনকারীরা সংশ্লিষ্ট কোটার ফরম ২৩ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ডিন অফিস হতে সংগ্রহ করে যথাযথভাবে পূরণের পর ডিন অফিসে জমা দিতে হবে।ফলাফল নিরীক্ষণের জন্য নির্ধারিত ফি প্রদান সাপেক্ষে আগামী ২০ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত চারুকলা অনুষদের ডিন অফিসে আবেদন করতে পারবে। আগামী ৮ নভেম্বর ওয়েবসাইটে প্রাপ্ত বিভাগ তালিকা প্রকাশ করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি একশজন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৯৮ জনই ফেল
Share!