Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

সরকারিভাবে দেশে তৈরি হয়েছে ৫০০ মোবাইল অ্যাপ

সরকারিভাবে দেশে তৈরি হয়েছে ৫০০ মোবাইল অ্যাপ। সেই অ্যাপগুলোর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় গত ২৬ জুলাই। প্রকাশ করা হয় গুগল প্লে স্টোর ও আইসিটি বিভাগের ন্যাশনাল ফাইভ হান্ড্রেড অ্যাপস ডট কমে। সরব ঘোষণায় এগুলোর অস্তিত্ব জানান দেওয়া হলেও বাস্তবে কতোটা কাজের হয়েছে এগুলো? তিন মাসে প্রযুক্তিপ্রেমীদের কাছে জনপ্রিয়ই বা হলো কতোটা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নিবিড় পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে বাংলা ট্রিবিউন। সেই পর্যবেক্ষণে জানা গেছে, এ উদ্যোগকে আন্তরিকভাবে সমর্থন জানালেও প্রযুক্তিপ্রেমীরা  বলছেন, এখনও সন্তোষজনক মানে পৌঁছাতে পারেনি সরকারি সহায়তাপুষ্ট অ্যাপগুলো। এগুলোকে মানসম্মত করতে এখনও অনেকটা পথ পাড়ি দেওয়া বাকি।অ্যাপগুলোর মধ্যে রয়েছে বঙ্গভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার তথ্য ও সেবা পাওয়াসংক্রান্ত ৩০টি এবং ২০০টি সৃজনশীল ধারণার অ্যাপস। আরও আছে এনবিআর-এর ই-টিআইএন, ভ্যাট ও নন ভ্যাট পণ্য যাচাই, বাংলাদেশ বিমান ও বাংলাদেশ রেলওয়ের সময়সূচি, বিনিয়োগ বোর্ডের রেজিস্ট্রেশন স্ট্যাটাস পরীক্ষা, জাতীয় পরিচয়পত্র, স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র, সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধ, ট্যাক্স ক্যালকুলেটর, প্রাইজবন্ড ইত্যাদি মিলিয়ে ৫০০ অ্যাপস।গুগল প্লেতে রাখা অ্যাপগুলোর নিচে ব্যবহারকারীদের লেখা বিভিন্ন মন্তব্যে বোঝা যায়, কেউ কেউ এসব অ্যাপকে ভালো বলছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন খুব খারাপ। কোনওটাতে তথ্যের ঘাটতি, কোনওটা অসম্পূর্ণ, কোনওটাকে আবার পুরনো প্রযুক্তি হিসেবে অভিহিত করেছেন প্রযুক্তিপ্রেমীরা। আবার কিছু কিছু অ্যাপ কোনও কাজই করে না এমন অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ। অনেকে ‘কিছু অ্যাপ’ থেকে উপকার পেয়েছেন এমনটা জানালেও তাদের অনেকেরই মন্তব্য এগুলোতে আরও তথ্য যোগ করতে হবে।ইন্টারনেট ঘেঁটে পাওয়া এসব তথ্য স্পষ্টভাবেই নির্দেশ করছে সরকারিভাবে দেশে তৈরি হওয়া অ্যাপগুলোর বেশিরভাগই এখনও সম্পূর্ণ নয়। এগুলোতে এখনও কাজ করার আছে। প্রতিনিয়ত এতে সর্বশেষ তথ্য যোগ এবং নতুন সুবিধা যুক্ত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগী হতে হবে। তাহলেই এসব অ্যাপ শতভাগ কার্যকরী হয়ে উঠবে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।এ বিষয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের কাছে জানতে চাইলে তিনিও অ্যাপগুলোর কার্যকারীতা এখনও পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সব অ্যাপই অনলাইনে দিয়ে দিয়েছি। এর মধ্যে ১০০টি অ্যাপ খুবই ভালো করছে। আর বাকি ৪০০ অ্যাপ পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এগুলোতে প্রতিনিয়ত আপগ্রেডের কাজ চলছে। আইসিটি বিভাগের এই প্রতিমন্ত্রী আশাবাদী, শিগগিরই ৫০০ অ্যাপ সবার প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হবে এবং জনপ্রিয় হবে।তবে সবগুলো অ্যাপ গুগল প্লে স্টোরে নেই জানানো হলে পলক বলেন, আমাদের জানানো হয়েছে ৪০০ অ্যাপ পর্যবেক্ষণে রয়েছে। ওদের পর্যবেক্ষণ শেষ হলে সবগুলো অ্যাপ গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যাবে। তবে তিনি উল্লেখ করেন, আইসিটি বিভাগের ন্যাশনাল ফাইভ হান্ড্রেড অ্যাপস ডট কম আইসিটি বিভাগের অ্যাপস্টোরে অ্যাপগুলো রয়েছে। ওখান থেকেও অ্যাপগুলো ফ্রি ডাউনলোড করা যাবে। পলক উল্লেখ করেন, একসঙ্গে ৫০০ অ্যাপ তৈরি তার মন্ত্রণালয়ের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জের ছিল। কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, এ ধরনের বড় আকারের কাজ দেশে এই প্রথম। আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে অ্যাপগুলো চূড়ান্ত করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি আরও বলেন, অ্যাপগুলো টেন্ডারের মাধ্যমে কোনও প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে তৈরি করা হয়নি। আইসিটি বিভাগ সাড়ে তিন হাজার তরুণকে ১৮ মাসের প্রশিক্ষণ দিয়ে এই অ্যাপগুলো তৈরি করেছে। আর এর ফলে এইসব তরুণ নিজেরা অ্যাপ তৈরি করার সক্ষমতা অর্জন করেছে।তিনি জানান, আইসিটি বিভাগ অ্যাপ ডেভেলমেন্টের জন্য একটি বিশাল প্রকল্প শুরু করতে যাচ্ছে।পলক বলেন, আমরা যে ৫০০ অ্যাপ তৈরির কাজ শুরু করেছিলাম সেটা সফলভাবে করছি। মোবাইল অ্যাপসে আমাদের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত ভালো করছে। একটা নতুন প্রজেক্ট নিয়ে আসছি যার নাম মোবাইল অ্যাপ ও গেমিং ডেভেলপমেন্ট ইন্ডাস্ট্রি। আগের কর্মসূচির অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই প্রজেক্ট পাশ হলে মোবাইল অ্যাপ ও গেমিং ইন্ডাস্ট্রির একটি নতুন দ্বার উন্মোচন হবে।জানা গেল, এই কর্মসূচির আওতায় অন্তত ৮ হাজার ৭৫০টি মোবাইল অ্যাপ এবং অসংখ্য মোবাইল গেম পাবে বাংলাদেশ। আইসিটি বিভাগ ‘ইনসেপশন অব ইকোসিস্টেম অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন অ্যান্ড গেমিং ইন্ডাস্ট্রি’ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। এ জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৮৫ কোটি টাকা। তবে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়তে পারে বলে আইসিটি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।আইসিটি বিভাগ বলছে, এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো দেশে গেমের বাজার তৈরি এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। ফলে কোম্পানিগুলোকেও প্রমোট করা সম্ভব হবে। দেশের অনেক ভালো কোম্পানি আছে যারা কাজ পাচ্ছে না তাদেরও এই উদ্যোগের মাধ্যমে কাজ দেওয়া সম্ভব হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি হওয়া অ্যাপ আগামীতে সার্বিকভাবে জিডিপিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।আইসিটি বিভাগের একটি সূত্র জানায়, এই প্রকল্পে ১ হাজার ৭৫০ জনকে অ্যাপস মার্কেটিং ও মনিটর করতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ২৮ হাজার ইউএক্স (ইউজার এক্সপেরিয়েন্স) ডিজাইনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আরও ২ হাজার ৮০০ জনকে দেওয়া হবে গেম এনিমেটর প্রশিক্ষণ। আইসিটি বিভাগের http://national500apps.com/index.php?r=site/allapps সাইটের এই লিংকে গেলে অ্যাপগুলো পাওয়া যাবে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top