ক্রিকেটের চেহারা টি-টোয়েন্টি নাকি বদলে দিয়েছে। যার ছাপ পড়েছে টেস্ট-ওয়ানডেতে। কতটা বদলেছে সেটির ভালো উদাহরণ হয়ে থাকছে দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ২৯৫ রানের লক্ষ্য মাত্র ৩৬.২ ওভারে পেরিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সে ম্যাচে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের খেলার ধরনটা এমনই ছিল যে মনে হয়েছে স্কোরটা আরও বড় হলেও জয় পেতে তাদের কোনো অসুবিধা হতো না। সেই মনে হওয়াটা কাল একেবারে হাতে-কলমে তারা বুঝিয়ে দিল। এবার ৩৭২ রানের লক্ষ্যও বলা যায় সহজেই ছুঁয়ে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচ গেছে বটে, কিন্তু তখনো হাতে ছিল ৪ উইকেট।পাঁচ ম্যাচের প্রথম তিনটিই জিতে সিরিজ জিতে নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যেভাবে তারা খেলছে, অস্ট্রেলিয়া না হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় পড়ে। কাল তো ওয়ানডে ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম রান তাড়া করে জেতার কীর্তি গড়লেন ডেভিড মিলাররা।
এই মিলারের এক সেঞ্চুরিতেই হেরে গেছে অস্ট্রেলিয়ার জোড়া সেঞ্চুরি। ডেভিড ওয়ার্নারের ১১৭, স্টিভ স্মিথের ১০৮ আর অ্যারন ফিঞ্চের ৩৪ বলে ৫৩-র ইনিংসে ৩৭১ তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। শুরু থেকে অনায়াসে এই রানের পেছনে ছুটেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৪ তম ওভারে রাইলি রুশো আউট হওয়ার আগে তাদের স্কোর ছিল ৩ উইকেটে ১৭৯! রুশোর আউট হওয়াটা দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষেই গেছে। এরই পরই যে নামলেন কিলার মিলার। তাঁর ৭৯ বলে ১১৮ রানের ইনিংসটি শেষ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়াকে ছিটকে দিল।
সত্যি বলতে কি, কাল ডারবানে টি-টোয়েন্টি নীতিতেই এগোচ্ছিল স্বাগতিকেরা। ২০ ওভারে তাদের স্কোর ছিল ২ উইকেটে ১৬১। তাতে শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৭০ করা কুইন্টন ডি ককেরই ছিল মূল ভূমিকা। মিলারকে হাত খোলার সুযোগ করে দিয়েছিলেন এই ডি ককই। এই দুজন ১৪০ স্ট্রাইক রেটের ওপরে রান তুলেছেন বলেই কিন্তু বাকি কাউকে সেভাবে সে রকম ঝুঁকি নিতে হয়নি। অবশ্য হাশিম আমলার ৩০ বলে ৪৫ রানের ইনিংসটির কথাও বলা উচিত। আকারে ছোট হলেও ওপেনিং জুটিতে ডি কককেও তো আড়ালে ফেলে দিয়েছিলেন। কেবল ৩৬ রানই এসেছে তাঁর ৯টি চার থেকে। আমলা যখন আউট হলেন, ডি কক কিন্তু তখনো মাত্র ২০ রানে অপরাজিত।
অনেকেরই অবদান আছে। তবে ১০টি চার ও ৬ ছক্কার ইনিংসে ম্যাচ সেরার লড়াইয়ে বাকিদের পেছনে ফেলেছেন মিলার, কিলার মিলার!
টি-টোয়েন্টির ছাপ পড়েছে টেস্ট-ওয়ানডেতে
Share!