Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে সমস্যা, ১০০ ট্যাংক মোতায়েন করেছে ভারত

চীন সীমান্তের পূর্ব লাদাখে ১০০ ট্যাংক মোতায়েন করেছে ভারত। শিগগিরই সেখানে আরও ট্যাংক মোতায়েন করা হবে। একইসঙ্গে সেনা উপস্থিতিও বাড়ানো হবে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম এ খবর নিশ্চিত করেছে। তবে নিরাপত্তা ও কৌশলগত কারণ দেখিয়ে ট্যাংকগুলো কোথায় মোতায়েন করা হয়েছে সে বিষয়ে জানানো হয়নি। অন্যদিকে আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই চীন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভারী অস্ত্রশস্ত্র, ট্যাঙ্ক এবং বাঙ্কারের সংখ্যাও দ্রুত বাড়ানো হচ্ছে। রাস্তাঘাট, নতুন বিমানঘাঁটি এবং নজরদারি বাড়িয়ে পূর্ব লাদাখকে সুরক্ষিত করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইতিমধ্যে চীন এই ধরনের সামরিক প্রস্তুতি অনেক আগেই সেরে ফেলেছে। তবে নয়াদিল্লির এই নতুন সামরিক তত্পরতাকে মোটেই ভাল চোখে দেখছে না বেইজিং। লাদাখ এবং অরুণাচল প্রদেশে ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। ভারতের নিয়ন্ত্রণে যে অংশ রয়েছে, তার অনেকটাকেই চীন নিজেদের বলে দাবি করে। ফলে দুই দেশের মধ্যে কোনও স্থায়ী সীমান্ত চিহ্নিত করা এখনো সম্ভব হয়নি। লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলকে (এলএসি) সীমানা হিসেবে মেনে নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং সেনারা নজরদারি চালায়। লাদাখ ও অরুণাচলে সীমান্ত চৌকি পর্যন্ত বড় বড় রাস্তা বানিয়ে, বিপুল সামরিক অবকাঠামো গড়ে চীন সব সময়ই ভারতকে চাপে রাখতে চেয়েছে। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে লাদাখ এবং অরুণাচলে দ্রুত সামরিক পরিকাঠামো বাড়ানো শুরু করে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইন্দো-তিব্বোতিয়ান বর্ডার পুলিশের (আইটিবিপি) হাতে অনেক ভারী অস্ত্রশস্ত্র দেয়া হয়। নতুন নতুন রাস্তা, বিমানঘাঁটি এবং ফর্টিফায়েড বাঙ্কার তৈরি করা শুরু হয়। পাঁচ বছরের মধ্যে লাদাখ সীমান্তে ভারতের সামরিক প্রস্তুতির চিত্র পুরোপুরি বদলে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই এলএসি বরাবর ভারতীয় বাহিনীকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে। ট্যাংকের সঙ্গে বাড়ানো হচ্ছে সেনা উপস্থিতি
গতকাল মঙ্গলবার এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬২ সালের ইন্দো চীন যুদ্ধের সময় লাদাখ সীমান্তে সীমিত সংখ্যক ট্যাংক মোতায়েন করেছিল ভারত। ওই যুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর ট্যাংকগুলো প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় পর আবারও লাদাখ সীমান্তে ট্যাঙ্ক মোতায়েন করেছে ভারত। কয়েক মাস আগে টিপু সুলতান, মহারানা প্রতাপ ও আওরঙ্গজেব নামের তিনটি ট্যাংক মোতায়েন করা হয়েছিল। এবার তার সঙ্গে যোগ হলো আরও ১০০ ট্যাংক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিরক্ষা বাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এনডিটিভি’কে বলেন, ওই সামরিক যানগুলো লাদাখ উপত্যকার সুবিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থান করবে। পাশাপাশি চীন সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনা ?উপস্থিতি আরও বাড়ানো হবে। তবে ট্যাংক ইউনিটের কমান্ডের দায়িত্বে থাকা সেনা কর্মকর্তা কর্নেল বিজয় দালালের মতে, এতো উঁচুতে ট্যাংক মোতায়েন রাখাটা সহজ কাজ নয়। তিনি এনডিটিভিকে বলেন, পাহাড়ি এলাকায় বাতাসে অক্সিজেনের মাত্রা কম হওয়ায় এবং তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে অবস্থান করায় সেখানে ট্যাংক পরিচালনা করা সহজ নয়। ওই ট্যাংকগুলোকে সচল রাখতে সেনাবাহিনী স্পেশাল লুব্রিকান্ট ও জ্বালানি ব্যবহার করে থাকে। তাছাড়া প্রতি রাতে অন্তত দুইবার ইঞ্জিনগুলো পরীক্ষা করা হয়। তবে বিজয় দালালের দাবি, লাদাখের মতো পাহাড়ি অঞ্চলে ট্যাংক পরিচালনার কাজ কঠিন হলেও সেনাবাহিনী ওই চ্যালেঞ্জ মোকোবেলা করতে সক্ষম। চীনা সীমান্ত এলাকায় তিনটি ট্যাংককে যে কোনো হামলা মোকাবেলার জন্য সর্বদা প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ভারতের তত্পরতায় অস্বস্তি চীনের

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top