চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অব পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রির (আইইউপিএসি) এক বিবৃতিতে নতুন আবিষ্কৃত এই মৌলগুলোর অস্তিত্ব সম্পর্কে আইইউপিএসি স্বীকৃতি দেয়। এত দিন পর্যন্ত মৌলগুলো মৌল নম্বর ১১৩, ১১৫, ১১৭ ও ১১৮ নামে পরিচিত ছিল। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী এগুলোর নামকরণ করা হয়েছে যথাক্রমে:-
—নিহোনিয়াম (Nh),
-মস্কোভিয়াম (Mc),
-টেনেসসাইন (Ts) ও
-অগ্যানিসন (Og)।
প্রতিটি মৌলের আবিষ্কারক দলের প্রস্তাবকৃত নামের মধ্য থেকে এই চারটি নাম বেছে নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে শর্ত ছিল, নামগুলো অবশ্যই কোনো পৌরাণিক চরিত্র/বিষয়, ভৌগোলিক স্থান, বিজ্ঞানী অথবা খনিজের নামে হতে হবে। জাপানের ‘রিকেন’ গবেষণাগারে কোসুকি মরিতার নেতৃত্বে গবেষকদল বিসমাথকে ক্রমাগত জিংক-৭০ নিউক্লিয়াস দ্বারা আঘাত করার ফলস্বরূপ ২০০৪ ও ২০১২ সালে ১১৩ নম্বর মৌলের অস্তিত্ব সম্বন্ধে নিশ্চিত হন। নিহমোনিয়াম নামের এই মৌল পর্যায়সারণিতে প্রথম পূর্ব এশীয় নাম হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। রুশ ও মার্কিন বিজ্ঞানীরা ১১৫ ও ১১৭ নম্বর মৌল দুটি আবিষ্কার করেছেন এবং তাঁদের প্রস্তাবকৃত নাম দুটি যথাক্রমে মস্কোভিয়াম ও টেনিসসাইন। রাশিয়ার জয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার রিসার্চ, যুক্তরাষ্ট্রের ওক রিজ ও লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরির যৌথ উদ্যোগে মৌল দুটি আবিষ্কৃত হয়। এর মধ্যে মস্কোভিয়ামের নামকরণ করা হয়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর নামানুসারে। একইভাবে টেনিসসাইন নামটি নির্দেশ করছে মার্কিন স্টেট টেনেসিকে, যা কি না ভারী মৌল-সংক্রান্ত গবেষণার অন্যতম কেন্দ্র। একই গবেষক দল বিখ্যাত রুশ পরমাণু বিজ্ঞানী ইউরি অগ্যানেসিয়ানের সম্মানে ১১৮ নম্বর মৌলটির নামকরণ করেছে অগ্যানিসন। তিনি ১১৭ নম্বর মৌলের আবিষ্কারক দলের নেতৃত্বে ছিলেন। অবশ্য প্রস্তাবিত নামগুলো চূড়ান্ত করতে এখনও বেশ সময় লাগবে। গবেষকদের হিসেবে সেটা অন্তত পাঁচ মাস। আইইউপিএসির প্রধান নির্বাহী লিন সোবির ভাষ্যমতে, ‘বিভিন্ন ভাষাভাষী অঞ্চলের মানুষের কাছে এই নামগুলো গ্রহণযোগ্য কি না, তা যাচাই করা প্রয়োজন। নামকরণের ব্যাপারে চূড়ান্ত রায় জনগণ ও বিজ্ঞানী মহলই দেবে।’