পানামা পেপার্সে উঠে এসেছে বাংলাদেশ সংশ্লিস্ট মোট ৫৬ নাম। এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে ২৪ নাম। একাধিক অফশোর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে দুজনের নাম এসেছে দুবার করে। এরা প্রত্যেকে কোনো না কোনোভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় নতুন তথ্য প্রকাশ করে। এতে দেশভিত্তিক ডাটাবেজে নতুন ব্যক্তিদের নাম, তাদের অফশোর প্রতিষ্ঠানের নাম, নিবন্ধনের স্থান, বর্তমান অবস্থা, প্রতিষ্ঠানে তাদের ভূমিকা কি সেসব তথ্য উল্লেখ করা হয়। যদিও তালিকায় বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয় নি। তালিকায় বাংলাদেশের নতুন যে নামগুলো এসেছে সেগুলো হলো, কফিল এইচ এস মুয়িদ, দ্য বিয়ারার (২ বার), পেসিনা স্টেফানো, রুডি বেঞ্জামিন, মো. ইউসুফ রায়হান রেজা, ইশরাক আহমেদ, মিস নভেরা চৌধুরী, ফারহাদ গণি মোহাম্মদ, মেহবুব চৌধুরী, বিলকিস ফাতিমা জেসমিন, রজার বার্ব, মো. আবুল বাশার, জেইন ওমার, বেনজির আহমেদ, মো. আফজালুর রহমান, মল্লিক সুধীর, সরকার জীবন কুমার, নিজাম এম সেলিম, মো. মোকসেদুল ইসলাম, মো. মোতাজ্জারুল ইসলাম (২বার), মো. সেলিমুজ্জামান ও মো. আফজালুর রহমান। এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই ঠিকানা দেয়া আছে হংকং, চীনসহ বিভিন্ন দেশের ।
দুই অফশোর প্রতিষ্ঠান: বাংলাদেশ ডাটাবেজে ৫৬ ব্যক্তির নাম ছাড়াও রয়েছে ২ টি অফশোর প্রতিষ্ঠানের নাম। একটি সোয়েন ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। অপরটি সেভেন সি’জ অ্যাসেটস লিমিটেড। দুটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই গুলশান-২ এর একই ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। আর প্রতিষ্ঠান দুটিতে সংশ্লিষ্ট দু’জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন: স্টেফান পিরকার ও রুখসানা পিরকার।
ইন্টারমিডিয়ারি ৩: বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট ইন্টারমিডিয়ারি ৩ ব্যক্তির নাম রয়েছে। এর মধ্যে নতুন যোগ হয়েছে স্টিফান পিরকারের নাম। বাকি দুজন হলেন, বিবিটিএল ও দিলিপ কুমার মোদি। বাংলাদেশের ঠিকানা ৪২: অফশোর প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের মোট ৪২টি ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। ডাটাবেজে ঠিকানা ও ঠিকানা ব্যবহারকারী ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। নামগুলো থেকে বোধগম্য হয় বাংলাদেশি ছাড়াও বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা এসব ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। ঢাকার, গুলশান, বারিধারা, বনানি, মিরপুর, বসুন্ধরা ছাড়াও রয়েছে, টঙ্গি, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ঠিকানা। গতকাল রাতে পানামা পেপার্সে বিশ্বব্যাপী নতুন দুই লাখেরও বেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কর ফাঁকির তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় এই তথ্যগুলো যেকোনো স্থান থেকে দেখার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এসব তথ্যে বেরিয়ে এসেছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ২০টিরও বেশি ‘ট্যাক্স হেভেনে’র নাম। পানামাভিত্তিক আইনি পরামর্শ প্রতিষ্ঠান মোসাক ফনসেকার কাছে রক্ষিত ছিল এসব নথি। জার্মানির পত্রিকা সুয়েডডয়চে জেইটাং প্রথম এই নথিগুলো অজ্ঞাতসূত্র থেকে হাতে পায়। পরে তারা তা শেয়ার করে আইসিআইজের সঙ্গে। প্রায় ৮০টি দেশের ৩৭০ জনেরও বেশি রিপোর্টার এক বছর ধরে গবেষণা করে এসব নথি নিয়ে। এরপর ৩রা এপ্রিল প্রথমবারের মতো তার কিছু অংশ বিশ্বের গণমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করা হয়। এতে ক্ষমতাধর রাজনীতিক, সাবেক ও বর্তমান রাষ্ট্রপ্রধান, সেলিব্রেটিসহ বেরিয়ে আসে বড় বড় রাঘব-বোয়ালের নাম। আইসিআইজের কাছে জমা হওয়া মোট নথির পরিমাণ এক কোটি ১৫ লাখেরও বেশি। উইকিলিকসের ফাঁস করা নথির তুলনায় এর পরিমাণ হাজারেরও বেশি গুণ।