Monday , 23 December 2024
সংবাদ শিরোনাম

সিম নিবন্ধনের সময় বাড়ল এক মাস

আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক) পদ্ধতিতে চলমান সিম পুনর্নিবন্ধন কার্যক্রমের সময়সীমা ৩১ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ৩১ মে রাত ১২টা ১ মিনিটে অনিবন্ধিত সব সিম বন্ধ হয়ে যাবে। এ ছাড়া আগামীকাল রোববার থেকে প্রতীকী হিসেবে অনিবন্ধিত সিম যেকোনো তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকবে।আজ শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এসব কথা জানান।সংবাদ সম্মেলনে বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।তারানা হালিম বলেন, ৩১ মে রাত ১২টা পর্যন্ত সিম পুনর্নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে। এ সময়ের মধ্যে যাঁরা সিম পুনর্নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হবেন তাঁদের সিম ওই দিন রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে অর্থাৎ পয়লা জুন থেকে স্বয়ক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। এ ছাড়া আজ শনিবার ৩০ এপ্রিল রাত ১২টার মধ্যে যাঁরা সিম পুনর্নিবন্ধন করতে পারবেন না, তাঁদের সিম প্রতীকীভাবে পুনর্নিবন্ধন না করা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকবে।ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় নয় কোটি সিম পুনর্নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। সিম পুনর্নিবন্ধন সম্পন্ন হলে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে সরকারের প্রতিদিন আয় হবে ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকা।সিম নিবন্ধন কার্যক্রমের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর পর তিন ঘণ্টা সিম বন্ধ রাখার যৌক্তিকতা জানতে চাইলে তারানা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘এতদিন যাঁরা প্রচণ্ড দাবদাহ সহ্য করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পুনর্নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন তাঁরা যাতে মানসিকভাবে কষ্ট না পান এ জন্যই এ ব্যবস্থা। তা ছাড়া আমরা চাই সবাই যাতে পুনর্নিবন্ধনের আওতায় আসে।’যাঁদের হাতের আঙুল নেই বা শারীরিক প্রতিবন্ধী, তাঁদের আঙুলের ছাপ কীভাবে নেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মোবাইল অপারেটরদের এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেওয়া আছে। ৩১ মের পর আর কোনো সময় বাড়ানো হবে না বলেও জানান তিনি।গত ১৬ ডিসেম্বর বিটিআরসির কার্যালয়ে সিম নিবন্ধনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তারানা হালিম। ওই দিন আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হলেও পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতিতে নিবন্ধন শুরু হয় গত ১ নভেম্বর। সিম নিবন্ধনের সময় বেঁধে দেওয়া হয় ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।এরই মধ্যে গত ১৪ মার্চ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গত ১২ এপ্রিল ওই রুল নিষ্পত্তি করে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে মোবাইল সিম নিবন্ধনকে বৈধ ঘোষণা করেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।এর পরপর বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম পুনর্নিবন্ধন করতে গ্রাহকরা ভিড় করেন নির্ধারিত স্থানে। একসঙ্গে অনেক গ্রাহকের সিম নিবন্ধনে হিমসিম খায় মুঠোফোন অপারেটররা।এ ছাড়া দেশের সোয়া কোটিরও বেশি মোবাইল গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সঙ্গে আঙুলের ছাপ না মেলায় সিম নিবন্ধন হালনাগাদ করতে গত ২৮ এপ্রিল উপজেলা/থানা নির্বাচন কার্যালয় খোলা রাখার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।এই অবস্থায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়াতে সরকারের কাছে আবেদন করে দুই মুঠোফোন অপারেটর। এ জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কাছে চিঠি দেয় গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক। সিম নিবন্ধন শেষ করতে গ্রামীণফোন আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত দুই মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করে। বাংলালিংক আগামী ৩১ মে পর্যন্ত এক মাস সময় বাড়ানোর আবেদন করে। আর মোবাইল ব্যবহারকারী অধিকার সুরক্ষা ফোরাম মোবাইল সিম পুনর্নিবন্ধনের সময় দুই মাস বাড়ানোর দাবি জানায়।এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাবো পৌরসভার কান্দাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে এসে ডাক ও টেলিযোগোযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সাংবাদিকদের জানান, এখনো পাঁচ কোটি সিম নিবন্ধন বাকি আছে। এটা ঠিক নয়। জঙ্গি অর্থায়নে যে সিম রয়েছে সেগুলো ঝরে পড়বে।বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে জনগণের মতামতকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে। তবে অনির্দিষ্টিকালের জন্য হবে না। এর একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকবে। ৩০ এপ্রিল এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।   এই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সংবাদ সম্মেলন করে সিম পুনর্নিবন্ধনের সময় আরো এক মাস বাড়ানোর ঘোষণা দেন তারানা হালিম।বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত গ্রামীণফোনের তিন কোটি ৬০ লাখ, বাংলালিংকের দুই কোটি চার লাখ, রবির এক কোটি ২০ লাখ ও এয়ারটেলের ৪০ লাখ সিম সফলভাবে নিবন্ধিত হয়েছে। মোট সাত কোটি ৩৩ লাখ সিম সফলভাবে নিবন্ধিত হয়েছে। এ সময়ে আঙুলের ছাপ ও তথ্য না মেলায় সোয়া কোটি সিমের নিবন্ধন সফল হয়নি। বর্তমানে দেশে চালু থাকা মোট সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি আট লাখ। সে হিসাবে মোট সিমের ৫৬ শতাংশ এখন পর্যন্ত সফলভাবে নিবন্ধিত হয়েছে।

Share!

About newsfair

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Scroll To Top