বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নেটওয়ার্কিং ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থাপনে কার্পণ্য করেছিল। এ কারণে হ্যাকাররা রিজার্ভ চুরি করতে সক্ষম হয়েছে।বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক ট্রেইনিং ইনস্টিটিউটের প্রধান মোহাম্মাদ শাহ আলম এ তথ্য জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের শুক্রবারের এক খবরে বলা হয়।প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকটির বৈশ্বিক আর্থিক নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা স্থাপনে মাত্র ১০ ডলার বা ৮০০ টাকা দামের রাউটার ব্যবহার করা হয়। তবে তাও ছিল ব্যবহৃত (সেকেন্ড হ্যান্ড)। আর সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য ফায়ারওয়ালও ছিল না। ভালো নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলে হামলাকীদের বাধাগ্রস্ত করতে পারত বলে মনে করেন শাহ আলম।হ্যাকারদের লক্ষ্য ছিল এক বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার চুরি করা। কিন্তু ভুলের কারণে তারা সেই লক্ষ পূরণ করতে ব্যর্থ হয়।শাহ আলম রয়টার্সকে বলেন, ফায়ারওয়াল থাকলে ব্যাংর্কের অর্থ চুরি করা কঠিন হতো। আর সেকেন্ড হ্যান্ড হার্ডওয়্যার ব্যবহৃত হাওয়ার কারণে নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণে নিতে হ্যাকারদের বেশি বেগ পেতে হয়নি।শাহ আলম দাবি করেন, সস্তা রাউটার ব্যবহৃত হওয়ায় তদন্তকাজ ব্যাহত হয়েছে। এ কারণে খুব সামান্য তথ্য জোগাড় করা সম্ভব হয়েছে। আর হ্যাকারদের কৌশলও ধরা যায়নি।গত ৪ ও ৫ ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের মোট ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৮০৮ কোটি টাকা চুরি করতে সক্ষম হয় হ্যাকাররা। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার বা ৬৪৮ কোটি টাকা প্রবেশ করে ফিলিপাইনে। আর বাকি দুই কোটি ডলার বা ১৬০ কোটি টাকা যায় শ্রীলঙ্কায়।১০০ কোটি ডলার চুরির লক্ষ্য থাকলেও বানান ভুলের কারণে বাকি অর্থ লোপাট করতে পারেনি হ্যাকাররা।বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তার জন্য আরো সময় ও অর্থ ব্যয় করতে হবে বলে সাইবার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান অপটিভের পরামর্শক জেফ উইচম্যান রয়টার্সকে বলেন, ‘একটি প্রতিষ্ঠান কোটি কোটি ডলার লেনদেন করে কিন্তু তারা এমনকি প্রাথমিক নিরাপত্তার বিষয়েও সতর্ক নয়।’
রিজার্ভ হ্যাকিংয়ের পেছনে ৮০০ টাকার রাউটার!
Share!