সউদী আরবে বসবাসরত প্রবাসীদের জন্য আসছে নতুন সুখবর। দেশটিতে কর্মরত বিদেশীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দিতে চলেছে সউদী সরকার। ২০২০ সালের মধ্যে দেশটিতে স্থায়ী বসবাসের সুযোগ বা গ্রিনকার্ড পাবেন সউদী প্রবাসীরা। ধারণা করা হচ্ছে, অনেকটা আমেরিকান গ্রীনকার্ডের মতই হবে সউদী গ্রীনকার্ড। এর মাধ্যমে সউদী সরকার অন্তত ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের চিন্তা কথা ভাবছে দেশটির সরকার। আর এই পরিকল্পনাকে দারুণভাবে স্বাগত জানিয়েছে ওই দেশে বসবাস করা প্রবাসীরা। সউদী কর্তৃপক্ষের ধারণা, ওই গ্রীনকার্ড পেলে সউদী আরবে ১০০ বিলিয়ন ডলার রোজগার করা সম্ভব। আর এ সম্ভাবনার লক্ষ্যেই এমন পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সউদী উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। তিনি ব্লুুমবার্গের সঙ্গে সাক্ষাতকারে এই কথা বলেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনকার্ড ব্যবস্থার অনুকরণে ফি’র বিনিময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ শ্রমিক নিয়োগ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। নতুন প্রজন্মের এই তরুণ রাষ্ট্রনেতার নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সউদী আরবের নীতি এবং চরিত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনছে। তার এই ঘোষণা প্রবাসীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। এই নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য সউদী আরবে বসবাসকারী বাংলাদেশীরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সউদী গেজেট জানিয়েছে, সউদী আরবের রাজস্ব আয়ের সবচেয়ে বড় অংশই আসে তেল বিক্রির মাধ্যমে। তেল বিক্রির ব্যবসা থেকে আয়ের মূল উৎস সরাতে গ্রিনকার্ড চালুর উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা হাতে নিতে যাচ্ছে দেশটির সরকার। গ্রিনকার্ড ব্যবস্থার মাধ্যমে অন্তত ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের চিন্তা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে সউদী আরবে বসবাসরত ভারতের ব্যবসা উন্নয়ন বিষয়ক নির্বাহী আমির কাইয়ুম আরব নিউজকে বলেন, যারা এখানে ৪০ বছরের বেশি সময় ধরে বাস করছেন তারা এই পরিকল্পনাকে দারুণভাবে স্বাগত জানিয়েছেন। আমি পরামর্শ দেব যেসব প্রবাসীর অন্তত একজন সন্তান স্বশস্ত্র বাহিনীতে স্বেচ্ছায় যোগ দেবে তাদের নাগরিকত্ব দিতে। সউদী সরকারের এমন পরিকল্পনাকে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন সালেহ আমপাসো নামে একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার। তিনি বলেন, দেশটিতে আমি ১৯৯২ সাল থেকে অবস্থান করছি। সউদী আরবে যেসব প্রবাসী জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় কাটিয়ে দিয়েছেন আমিও তাঁদের মধ্যে একজন। আমার সব সন্তান জন্ম এখানে। তাই যদি আমাদের নাগরিকত্ব বা গ্রীনকার্ড দেয়া হয় তবে তা হবে দারুণ সম্মানের। সউদী আরবে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিক ডা. এম এস করিমুদ্দিন বলেন, যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয় তবে আমি সবার আগে আবেদন করব। এটা প্রবাসীদের জন্য দারুণ খবর। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সউদী আরবকে আরো আপন করে নিতে পারবেন তাঁরা বলে জানান তিনি। দ্য ফেডারেশন অব লেবার কমিটির চেয়ারম্যান নিদাল রিদওয়ান সউদী গেজেটকে বলেন, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করে দেয়া হবে বলে আশা করছেন তিনি। রিদওয়ান বলেন, নতুন এই পদ্ধতি সউদী আরবের অর্থনীতি ও সমাজে উন্নয়ন বয়ে আনবে। সউদী আরবের নাগরিকদের মতো প্রবাসী নাগরিকরাও জাকাত দেবেন, বিভিন্ন কর দেবেন এবং বীমার প্রিমিয়াম দেবেন। তাঁরাও নিজেদের ব্যবসা, শিল্প কারখানার মালিক হতে পারবেন।
Share!