আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে। গত নভেম্বরে সংস্থাটির আর্টিকেল-ফোর মিশন জানিয়েছিল, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। সোমবার রাতে ওই মিশনেরই রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রবৃদ্ধি হবে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।তবে আইএমএফের পূর্বাভাসের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, চলতি অর্থবছর বাজেটের যে লক্ষ্যমাত্রা তা অবশ্যই অর্জিত হবে। চলতি বছরের ৬ মাসে যে অর্জন তা থেকেই অনেকটা বোঝা যাচ্ছে। তিনি বলেন, পরিসংখ্যানগত সব তথ্যের মালিক আমি (কামাল)। আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক তিন মাস পরপরই তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে। এগুলো আসলে তারা কোন তথ্যের ভিত্তিতে করে জানি না। তবে যে যাই বলুক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ অর্জিত হবেই।আইএমএফ অবশ্য আগামী অর্থবছর প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হবে বলে মনে করছে। সাধারণত আইএমএফ দু’বছরে একবার কোনো দেশের ওপর আর্টিকেল-ফোর পর্যালোচনা করে। পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনের পর বাংলাদেশের ওপর সর্বশেষ পর্যালোচনা রিপোর্টটি তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি নিয়ে তাদের পূর্বাভাস সংশোধন করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়াবে বলে ধারণা সংস্থাটির। আগে তাদের পূর্বাভাস ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধিসহ কিছু কারণে আইএমএফ মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস কিছুটা বাড়িয়েছে। আইএমএফ বলেছে, কয়েক মাসের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের দুর্বল অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তারা প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়েছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অবকাঠামো সংকট এবং আর্থিক খাতে দুর্বল অবস্থাকে প্রবৃদ্ধির পথে মূল চ্যালেঞ্জ বলে উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। তাদের রিপোর্টে বাংলাদেশ সরকারের মতামতও রয়েছে। সরকার মনে করে, আইএমএফের পর্যবেক্ষণ রক্ষণশীল। রফতানি ও রেমিটেন্সে ধীরগতি এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগ তেমন চাঙ্গা না হলেও সরকার নিদেনপক্ষে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আশা করছে। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির।আইএমএফ মনে করে, ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সংঘাত কমেছে। কিন্তু রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল ২০১৪ সালের নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে কয়েকজন বিরোধী রাজনৈতিক নেতার সাজা হয়েছে। এসব কারণে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দীর্ঘায়িত হতে পারে। আইএমএফের মতে, ঋণ, বিনিয়োগ ও জিডিপি প্রবৃদ্ধির পথে অন্যতম বাধা হল আর্থিক খাতের দুর্বলতা। ২০১২ সালের শেষ থেকে ব্যাংকিং খাতে বিশেষত সরকারি ব্যাংকে সম্পদের গুণগত মান, মুনাফাশীলতা ও মূলধন পর্যাপ্ততার অবনতি হচ্ছে –
Share!