সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সৌদি আরবের নেতৃত্বে গড়া নতুন জোটের সদস্যদের কেউ কেউ সেই জোটে নিজেদের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছে।পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, জোটে যোগ দেয়ার ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে তারা মত দেননি। এর ফলে মুসলিম দেশগুলোর নতুন এই সামরিক জোটের কার্যক্রম এবং সাফল্য নিয়ে শুরুতেই প্রশ্ন উঠেছে।পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আইজাজ চৌধুরী বলেছেন, সৌদি সামরিক জোটে নিজেদের অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা শুনে তিনি বিস্মিত হয়েছেন। একই সঙ্গে রিয়াদে নিযুক্ত পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূতের কাছে এ বিষয়ে বিশদ জানতে চাওয়া হয়েছে। বুধবার এক বিবৃতিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জোটে পাকিস্তানের ভূমিকা কি হবে, তা ঠিক করার আগে ওই জোটে আদৌ তারা যোগ দেবে কিনা সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।একই কথা জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চুক্তির বিস্তারিত কার্যবিধি পর্যালোচনা করে দেখছে ইন্দোনেশিয় সরকার। ফলে সামরিক জোটে যোগ দেয়ার বিষয়ে তারা এখনো নিশ্চিত নয়।এদিকে মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিশামউদ্দিন হুসেইন এই জোটকে সমর্থন জানালেও, জোটে কোনরকম সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন।ফলে গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরাষ্ট্রগুলোর এরকম প্রতিক্রিয়ার পর নতুন সামরিক জোটের কার্যক্রম এবং সাফল্য নিয়ে শুরুতেই প্রশ্ন উঠেছে।তবে এই জোটকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, নতুন জোট জঙ্গিবাদ ঠেকাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ল্যাভরভ বলেন ,এটি একটি শুভ সূচনা, পরবর্তীতে জাতিসংঘ এ নিয়ে একটি পূর্নাঙ্গ সম্মেলন আয়োজন করতে পারে। হয়ত সেখান থেকে নতুন আরেকটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি হবে।মঙ্গলবার ৩৪টি মুসলিম প্রধান দেশ নিয়ে একটি নতুন সামরিক জোট গঠনের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব।রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে সৌদি প্রতিরক্ষামন্ত্রী যুবরাজ মোহামেদ বিন সালমান জানান, এই জোট ইরাক, সিরিয়া, মিশর আর আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। বাংলাদেশও এই জোটে যোগ দিয়েছে।সৌদি আরবের নেতৃত্বে জোটভুক্ত দেশগুলো হল- সৌদি আরব, বাংলাদেশ, বাহরাইন, বেনিন চাদ টোগো, কোর্মোরস, আইভরি কোস্ট, তিউনিশিয়া, জিবুতি, মিসর, গ্যাবন, গিনি, তুরস্ক, জর্ডান, কুয়েত, লেবানন, লিবিয়া, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, মরক্কো, মালি, নাইজেরিয়া, মোরিতানিয়া, নাইজার, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, কাতার, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, সুদান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইয়েমেন।প্রসঙ্গত, ইসলামাবাদকে না জানিয়ে কোনো সামরিক জোটে পাকিস্তানকে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা এই প্রথম নয়। এর আগে ইয়েমেনে হামলার জন্য গঠিত সামরিক জোটে পাকিস্তান রয়েছে বলে ঘোষণা করেছিল সৌদি আরব। এ জোটের মিডিয়া সেন্টারেও পাকিস্তানি পতাকাও প্রদর্শন করা হয়েছিল। কিন্তু পরে ইয়েমেনবিরোধী যুদ্ধে অংশ নিতে অস্বীকার করেছিল পাকিস্তান। জাতিসংঘ শান্তি মিশন ছাড়া দেশের বাইরে কোনো সীমান্তে সেনা মোতায়েন না করার নীতি গ্রহণ করেছে পাক সরকার। এর আগে দু’বার সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যোগ দেয়ার মার্কিন অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছিল ইসলামাবাদ।
Share!