একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে দলের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকরের প্রতিক্রিয়ায় সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল চলছে। আজ সোমবার ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৫টা পর্যন্ত এ হরতাল চলবে। গত রোববার দলের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সদস্য এম আলমের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ হরতালের ডাক দেয়া হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স ও ফার্মেসি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।হরতালের সমর্থনে রাজধানীর মিরপুর, গাজীপুরের জয়দেপুর, নারায়ণগঞ্জের মুসলিমনগরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝটিকা মিছিল করেছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এসময় কয়েকটি এলাকায় রাস্তায় অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভ করে তারা।এছাড়া সকাল ১১টার দিকে সিলেট নগরীর কুমারপাড়া এলাকায় একটি মিছিল বের করার চেষ্টা করে শিবিরকর্মীরা। তাদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শর্টগানের ৮ রাউন্ড গুলি করে বলে জানা গেছে।এদিকে হরতাল ঘিরে রাজধানীসহ সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজধানীতে মোতায়েন করা হয়েছে ১৩ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য। বাড়ানো হয়েছে পুলিশ ও র্যাবের টহল এবং তল্লাশি। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সব ইউনিটে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করেছে।রাজধানী ঢাকাকে নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আনা হয়েছে। ৪৯টি থানা পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। থানাভিত্তিক টহল ও তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে।ডিএমপির এক কর্মকর্তা বলেন, যুদ্ধাপরাধের দুটি মামলার রায় কার্যকরের আগে থেকেই রাজধানীতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের টহল ও তল্লাশিও বাড়ানো হয়েছে।অপরদিকে রাজধানীর বাইরেও সারা দেশে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, বগুড়া, জয়পুরহাটসহ যেসব স্থানে আগে নাশকতা বেশি হয়েছে ওইসব জেলায় কড়া নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে।পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (অপারেশন) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন যুগান্তরকে জানান, অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা নিরাপত্তা প্রস্তুতি ঢেলে সাজিয়েছি। যে কোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য পুলিশ প্রস্তুত আছে। হরতালে নাশকতা ঘটতে পারে বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করেছে।পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান যুগান্তরকে বলেন, দুটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর ও ঘোষিত হরতালকে কেন্দ্র করে জনজীবনে বিশৃংখলা সৃষ্টি, নাশকতার অপচেষ্টা বা আইনশৃংখলাবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ড যাতে কোনো গোষ্ঠী না ঘটাতে পারে সেজন্য র্যাব সক্রিয় আছে। র্যাবের নিজ নিজ ইউনিটগুলোসহ তাদের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় টহল জোরদার করেছে।এদিকে হরতালে যান চলাচলের ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ। ঢাকা শহর ও আশপাশের জেলাগুলোতে বাস-মিনিবাস চলাচল অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি।অপরদিকে জামায়াতের হরতাল প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নেমেছে ছাত্রলীগ। তারা বিভিন্ন এলাকায় হরতাল বিরোধেী মিছিল করেছে। এছাড়া হরতাল প্রত্যাখ্যান করে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে গণজাগরণ মঞ্চ।
সারা দেশে জামায়াতের হরতাল চলছে
Share!