রাশিয়ার কাছ থেকে আমদানি করা তেলের মূল্য বেঁধে দিতে সম্মত হয়েছে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭। বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি আর ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার লাগাম টেনে ধরতে দেশটির তেলের দাম বেঁধে দিতে একাট্টা পশ্চিমা বড় অর্থনীতির দেশগুলো। রাশিয়ার জন্য ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যয় নির্বাহ কঠিন করে তুলতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটটি।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, শুক্রবার জি-৭ জোটের অর্থমন্ত্রীরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি ‘বিনিময় মূল্যের’ চুক্তির ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন। অপরিশোধিত ও পেট্রোলজাত পণ্যের মূল্য বেঁধে দেয়ার ফলে বৈশ্বিক জ্বালানির মূল্যও কমবে।
জি-৭ জোট বলছে, যতদিন প্রয়োজন ততদিন আমরা ইউক্রেনের পাশে দাঁড়াব। শক্তিশালী অর্থনীতির জি-৭ জোটের দেশগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি এবং যুক্তরাজ্য। বৈশ্বিক বাণিজ্য ও আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থার নেতৃত্বে রয়েছে তারা।
যৌথ একটি বিবৃতিতে জোটের অর্থমন্ত্রীরা জানিয়েছেন, তেলের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করবে দেশগুলোর বড় একটি জোট। যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরবর্তী নিষেধাজ্ঞাগুলোর সঙ্গে কার্যকর হবে। আগামী ডিসেম্বরে রাশিয়া থেকে সাগরপথে আমদানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়া হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
রাশিয়া বলেছে, যেসব দেশ মূল্য বেঁধে দেবে সেগুলোর কাছে তেল বিক্রি করবে না তারা। ক্রেমলিন মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, যেসব দেশ মূল্য বেঁধে দেবে, রুশ তেল গ্রহণকারী দেশের তালিকায় সেগুলো থাকবে না।
এটা কার্যকর করতে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক সমর্থন প্রয়োজন হবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
রাশিয়ার তেলের মূল্যসীমা বেঁধে দিতে গত কয়েক মাস ধরে দেশগুলোকে চাপ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। পশ্চিমা দেশগুলো ইতোমধ্যে রাশিয়ার বেশ কিছু জ্বালানি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে চীন এবং এশিয়ার দেশগুলোতে তেল বিক্রি করে রাশিয়া প্রতিমাসে কয়েক বিলিয়ন ডলার আয় করছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়।
ভার্চুয়াল বৈঠকে অর্থমন্ত্রীরা বলেছেন, রুশ তেলের মূল্য বেঁধে দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে নির্দিষ্টভাবে রাশিয়ার আয় কমানো এবং আগ্রাসী যুদ্ধের সামর্থ কমিয়ে আনতে। মন্ত্রীরা আরও বলেছেন, সংঘাতের কারণে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে প্রভাব কমিয়ে আনতে চান তারা।
রুশ তেলের মূল্য বেঁধে দেয়ার অর্থ হলো, যেসব দেশ এ নীতি মানবে তারা রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ও পেট্রোলজাত পণ্য সাগর পথে আমদানি করতে পারবে কেবল ওই বেঁধে দেয়া মূল্য অথবা এরচেয়ে কম দামে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার পর বিশ্বে তেলের দাম বেড়েছে এবং তা এখনও চড়া রয়েছে। ফলে দেশটির রফতানির পরিমাণ কমলেও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে আয় বেড়েছে।