অবশেষে তাসকিন আহমেদের ব্যাটকে থামাতে সক্ষম হলো জিম্বাবুয়ে। এই তরুণ তারকা পেসার আজ নিজের ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসটা খেলেছেন। দলকে বাঁচিয়েছেন বিপদ থেকে। নিঃসন্দেহে তাসকিনের এই ইনিংস ক্রিকেট ইতিহাস মনে রাখবে। আজ একসময় মনে হচ্ছিল, তাসকিন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটা পেয়ে যাবেন। কিন্তু বিধি বাম। দিনের দ্বিতীয় সেশনে সুম্বার বলে বোল্ড হয়ে যান ১৩৪ বলে ১১ চারে ব্যক্তিগত ৭৫ রান করা তাসকিন। এর সঙ্গে অবসান হয় ২৭৬ বলে ১৯১ রানের অসাধারণ এক জুটির। দলের রান তখন ৯ উইকেটে ১৬১।
গতকাল শেষ বিকেল থেকেই তাসকিন স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের মতোই মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিলেন। পুরস্কার স্বরূপ তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। এজন্য তিনি খেলেছেন ৬৯ বল। হাঁকিয়েছেন ৮টি বাউন্ডারি।৩২ রানে অবশ্য একটা জীবনও পেয়েছেন তিনি। রিচার্ড এনগারাভার বলে দ্বিতীয় স্লিপে তার ক্যাচ ছাড়েন একজন ফিল্ডার। এর আগে তাসকিনের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর ছিল ৩৩। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে তিনি ওই ইনিংস খেলেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাসকিন-মাহমুদউল্লাহর অবিচ্ছিন্ন ৯ম উইকেট জুটিতে এসেছে ১২৭* রান। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৩৯৭ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এর আগে নবম উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি ছিল ৩৫ রানের।
৮ উইকেটে ২৯৪ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। গতকালের অবিচ্ছিন্ন তাসকিন-মাহমুদউল্লাহর ৯ম উইকেট জুটি আজ নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যায়। টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা যেখানে ব্যর্থ, সেখানে লড়াই শুরু হয়েছে মিডল অর্ডার থেকে। হারারে টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের স্কোর বড় করে যাচ্ছেন লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। তাসকিন-মাহমুদউল্লাহর জুটি একশ ছাড়িয়ে গেছে। দুজনেই ব্যক্তিগত মাইলফলকও অর্জন করেছেন।
বরাবরের মতো মহাবিপদে দলের হাল ধরা মাহমুদউল্লাহ আজ ক্যারিয়ারের ৫ম সেঞ্চুরি পূরণ করেন। এতে তার সময় লেগেছে ১৯৫ বল। হাঁকিয়েছেন ১১টি চার এবং ১টি ছক্কা। যদিও ১৬ মাস ধরে তাকে টেস্টে বিবেচনা করা হয় না। জিম্বাবুয়ে সফরের টেস্ট দলেও তার নাম ছিল না। গত ২৬ জুন হুট করে তার নাম অন্তর্ভূক্ত করা হয় তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিমের ‘বদলি’ হিসেবে।
মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরির পরপরই ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। এজন্য তিনি খেলেছেন ৬৯ বল। হাঁকিয়েছেন ৮টি বাউন্ডারি। স্বীকৃত পেসার হিসেবে একাদশে থাকা তাসকিনের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর ছিল ৩৩। ৮ উইকেটে ৪০৪ রান তুলে মাহমুদউল্লাহ-তাসকিনের জুটি অবিচ্ছিন্ন রেখেই লাঞ্চে যায় বাংলাদেশ। লাঞ্চ শেষে ফিরেও এই জুটিকে ভাঙতেই পারছিলেন না জিম্বাবুয়ের বোলাররা। দারুণ ধৈর্য্য নিয়ে জুটিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ-তাসকিন। সেই জুটির অবসান হয় ১৯১ রানে।
এর আগে গতকাল বুধবার হারারে স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত টেস্টের প্রথম দিনে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। স্বীকৃত ব্যাটসম্যানদের মাঝে সাইফ (০), সাদমান (২৩), শান্ত (২), মুশফিক (১১), সাকিব (৩), মিরাজ (০)- কেউই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। লিটন দাস দুঃখজনকভাবে ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে আউট হন। তার ১৪৭ বলে ১৩ চারে ৯৫ রানের ইনিংস থামে ডোনাল্ড ত্রিপানোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। অধিনায়ক মুমিনুল ৯২ বলে ১৩ বাউন্ডারিতে ৭০ রানে আউট হন।