ভারতে টানা চারদিনের দাঙ্গায় ৩৪ জন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হয়েছেন। এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, এ দিন গগন বিহার-জোহরিপুর এলাকার একটি ড্রেন থেকে দুটি লাশ পাওয়ার পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
বুধবার রাতেও উত্তরপূর্ব দিল্লির ভজনপুরা, মৌজপুর ও কারাওয়াল নগরে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল উত্তরপূর্ব দিল্লির সহিংসতা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করে সরকার শান্তি ফিরিয়ে আনবে বলে ব্যক্তিগতভাবে এমন আশ্বাস দিয়ে গেলেও শান্তি ফিরে আসেনি।
দাঙ্গা শুরু হওয়ার তিন দিন পর চতুর্থ দিন প্রথমবারের মতো এক বিবৃতিতে শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের ডাক দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে একের পর এক রিভিউ মিটিং করে গেলেও দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
গুরুতেগ বাহাদুর হাসপাতালের পরিচালক সুনিল কুমার বৃহস্পতিবার বলেন, তারা নিহত ৩০ জনের নাম নথিভুক্ত করেছেন। আর লোক নায়ক হাসপাতালের প্রধান চিকিৎসক আরও তিনজন মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
গুলিতে আহত হওয়ার পর তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা।
লোক নায়ক হাসপাতালের মেডিকেল সুপারইনটেন্ডেন্ট কিশোর সিং বলেন, আহত আরও ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হিন্দুত্ববাদী কর্মসূচিকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন। এতে তার উগ্র সমর্থকরা উৎসাহিত হয়েছেন। পরমাণু শক্তিধর দেশটির আশি শতাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।
মোদির হিন্দুত্ববাদী অ্যাজেন্ডায় অস্তিত্বের সংকটে পড়েছেন ভারতের ১৮ কোটি মুসলমান। দেশটি এখন হিন্দু-মুসলমানে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এখন তারা পরস্পরের মুখোমুখি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মেরুকরণে ভারতের ইতিহাসের অতীতের অন্ধকারময় অধ্যায়ের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ যুগেন্দ্র যাদব বলেন, দিল্লির একটি ছোট্ট এলাকায় এই সহিংসতা হয়েছে। কিন্তু এটা ১৯৮৪ সালের শিখ দাঙ্গাকে সামনে নিয়ে এসেছে।
তখনকার প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রিরা গান্ধীকে হত্যার পর শিখদের ওপর এভাবে হামলার ঘটনার কথাই তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। দিল্লিসহ বিভিন্ন শহরে কয়েক হাজার শিখকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তকারীরা যেটাকে সুসংগঠিত সহিংসতা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।