মোঃ জালাল :- বুড়িগঙ্গা নদীতে বাল্কহেড ডুবে চার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার ভোরে ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল অভিযান চালিয়ে লাশগুলো উদ্ধার করে। এ সময় বাল্কহেডের মাস্টারসহ দু’জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সীমান্তবর্তী এলাকার বুড়িগঙ্গা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
তাহমিনা এক্সপ্রেস নামে বালুবাহী বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুম থেকে পিরোজপুরের কাউখালী থানার চাষেরকাঠি এলাকার আবদুর রব তালুকদারের ছেলে মোস্তফা তালুকদার (৫৫), ছোট আরজি এলাকার রাশেদ হাওলাদারের ছেলে বাবু (১৮), ঝালকাঠির নলছিটি থানার কান্দেবপুর এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে লুৎফর রহমান (৩৯) ও বরিশালের বানারীপাড়া থানার ইলুহার এলাকার মহিবুল্লাহের (৬০) লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় বাল্কহেডটির মাস্টার আমির হোসেন (৫৫) ও শ্রমিক কুতুবউদ্দিনকে (২৯) আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বাল্কহেড মাস্টারের উদ্ধৃতি দিয়ে ফতুল্লার বিসিক শিল্পনগরীর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ কাজল মিয়া জানান, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ খেয়াঘাট এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে বাল্কহেডটি নোঙর করেন শ্রমিকরা। পরিষ্কার করার পর বাল্কহেডটির ইঞ্জিন রুমে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। বাল্কহেডে ছিদ্র থাকার বিষয়টি তারা বুঝতে না পারায় সেটিতে পানি প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে সেটি নদীতে ডুবে যায়। এ সময় চারজন ইঞ্জিন রুমে আটকা পড়েন। ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল লাশগুলো উদ্ধার করে। আহতদেরও উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক, ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আরেফিন ও লঞ্চ লেবার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। ইউএনও নাহিদা বারিক জানান, নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসন থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা ও দুটি করে কম্বল এবং খাবার দেয়া হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক কামরুল ইসলাম জানান, স্বজনদের কাছে লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। কোনো পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে না বলে জানানো হয়েছে। লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে এলাকার পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।