সীমান্ত পরিস্থিতি অবনতি নিয়ে ভারতীয় সেনাপ্রধানের বিবৃতির একদিন পরে পাল্টা জবাবের ঘোষণা দিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পাক সেনাবাহিনী। তারা বলছে, ভারতীয় সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ থেকে বিশ্বের নজর ঘুরাতে সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উত্তেজনাকর মন্তব্য করেছেন।
বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর এ কথা বলেন। এ খবর জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডন অনলাইনের।
এর আগে বুধবার ভারতীয় সেনাপ্রধান রাওয়াত এক বিবৃতিতে বলেছেন, সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ রেখার পরিস্থিতি যে কোনো সময় দ্রুত অবনতি হতে পারে। আমরা (ভারতীয় সেনাবাহিনী) প্রস্তুত রয়েছি।
আসিফ গফুর এক টুইট বার্তায় বলেন, সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির আশঙ্কায় ভারতীয় সেনাপ্রধানের উস্কানিমূলক বক্তব্য, ভারতজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভ থেকে বিশ্ববাসীর নজর সরিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী ভারতের যে কোনো আগ্রাসনের সমুচিত জবাব দেবে।
ডন অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর শেলের আঘাতে দুই কিশোর নিহতের দুইদিন পরে বিপিন রাওয়াত এ বিবৃতি দিয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুইজন বেসামরিক ব্যক্তি গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়।
অন্যদিকে ভারতীয় গণমাধ্যম দাবি করেছে, সীমান্তে মঙ্গলবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হামলায় দুই ভারতীয় জওয়ান নিহত হয়েছেন। এর একদিন পর (বুধবার) ভারতীয় সেনাপ্রধান এ বিবৃতি দেন।
সম্প্রতি ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন পাস করা হয়েছে। এতে ২০১৫ সালের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দুর নাগরিকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে দেশটিতে বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে। আইনটি বাতিলের প্রতিবাদে রাজধানী দিল্লিসহ গোটা ভারতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে আইনটি বাতিল নিয়ে ৬০টির ওপরে মামলা ও রিট করা হয়েছে। আগামী ২২ জানুয়ারি এসব মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে দেশটির আদালত।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ দমাতে সরকারের পক্ষ থেকে ইন্টারনেট বন্ধ, মোবাইল অপারেটর সংযোগ বিচ্ছিন্ন, কারফিউ ও গণগ্রেফতার চলছে। দেশটিতে সবধরনের মিছিল সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে অন্তত ৬ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।